শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৯৪ ভাগ কোম্পানি দর উত্থানে

ফ্লোর প্রাইসে বড় উত্থান

লেনদেন ১২শ কোটি, সূচক উত্থান  

পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে শেয়ার দর অতি কমার ক্ষেত্রে নিরুপায় হয়ে সর্বনিম্ন সীমা (ফ্লোর প্রাইস) নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। এটি নির্ধারণের পরদিন গতকাল রবিবার পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সব ধরনের সূচক বড় উত্থান হয়েছে। দুই স্টকে লেনদেনও বেড়েছে। এদিন দুই স্টকের ৯৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ কোম্পানি শেয়ার ও ইউনিট দর উত্থান হয়েছে।

এদিন বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা বহুগুনে বেড়েছে। এদিন ছিল শেয়ার ক্রেতার চাপের হিড়িক। বিভিন্ন মহলের শত চেষ্টায় পুঁজিবাজারে এধরনের উত্থান বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, দুই স্টকের ৯৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৯৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং সিএসইর ৯৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। অপরদিকে দুই স্টকের ১ দশমিক ৪১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এর মধ্যে ডিএসইর ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং সিএসইর ১ দশমিক ৪১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে।

ডিএসইতে ১৩ খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থান হয়েছে। শতভাগ পতন হওয়া এই খাতগুলো হলো- ইঞ্জিনিয়ারিং, ওষুধ রসায়ন, নন ব্যাংকিং আর্থিক, খাদ্য আনুষঙ্গিক, সেবা আবাসন, জ্বালানি শক্তি, আইটি, বিবিধ, সিরামিক, সিমেন্ট, পাট, পেপার এবং টেলিকম। এদিন বিমা ৯৮ শতাংশ, বস্ত্র ৯৩ শতাংশ, ব্যাংক ৯১ শতাংশ, ফান্ড ৮৩ শতাংশ, চামড়া ৮৩ শতাংশ এবং ভ্রমন অবসর খাতের ৭৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। খাতগুলোর শেয়ার দরে উত্থানের একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।

আরও পড়ুনঃ  ধানের চেয়ে শ্রমিক খরচ দ্বিগুণ

গত দুই কার্যদিবস (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) বড় পতনের পরেরদিন গতকাল রবিবারে বড় উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। এদিন (রবিবার) ডিএসই ও সিএসইর সব ধরনের সূচক বড় উত্থান হয়েছে। আগের কার্যদিবস থেকে এদিন (রবিবার) দুই স্টকে লেনদেন বেড়েছে। ডিএসইতে এদিন লেনদেন হয় ৫৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৪৪১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৩৬২টির বা ৯৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, কমেছে ৭টির এবং পরিবর্তন হয়নি ১৩টির। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫৩ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৩৩ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৪৮ দশমিক ৩২ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৩১ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৯৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৩৩৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে।

সিএসইতে গতকাল রবিবার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৩টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ২৬৭টির বা ৯৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ, কমেছে ৪টির এবং পরিবর্তন হয়নি ১২টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৭৯ দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯৭৬ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে।

এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ২৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২৪৫ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ২৪ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১৩ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২০ দশমিক ৮২ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ২১২ দশমিক ২১ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৭৭০ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ১৩২ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে।

আরও পড়ুনঃ  হারিয়ে যাচ্ছে ফুলবারেং

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টারা বলছেন, বিভিন্ন সমস্যায় ঈদের (ঈদুল আযহা) পর থেকেই পুঁজিবাজার নিম্নমুখী। ঈদের পরে টানা ৯ কার্যদিবস ধরে পুঁজিবাজার পতন। সেই পতন হঠাৎ করেই দুই কার্যদিবস সামান্য উত্থানে ফিরেছিল। সেই উত্থান ধরে রাখতে পারলো না। ফের নেমে আসলো পুঁজিবাজারে পতন। দীর্ঘ পতন পর হঠাৎ উত্থানে আসায় কিছু শান্তি পেয়েছিল বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বিদায়ী সপ্তাহে শেষ দুই কার্যদিবসে (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) বড় ধরনের পতনে তাদের সেই শান্তিতে বড় ধরনের ছেদ পড়েছিল।

এ ধরনের পতন বিষয়টি চরমভাবে ভাবিয়ে তুলেছে বিএসইসিকে। ফলে গত বৃহস্পতিবারে পতন থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বাঁচাতে শেয়ার দর পতনের  ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ঠিক তা পরেরদিন গতকাল রবিবার বড় উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। ফ্লোর প্রাইস নির্ধারন পরেরদিন এ ধরনের উত্থানকে স্বাগত জানালেন সংশ্লিষ্টারা।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন