ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছয়খাতে ডি-৮ সদস্যদের সহযোগিতা বৃদ্ধির আলোচনা

ঢাকায় ২০তম ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি, ডি-৮ মহাসচিব এ্যাম্বাসেডর ইসিয়াকা আব্দুলকাদির ইমাম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম, এমপি, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন এবং ডি-৮ সিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বক্তব্য প্রদান করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ২০তম ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভা শুরু হয়। হাইব্রিড ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় তুরস্ক ও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীসহ অন্যান্য ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন এবং বক্তব্য প্রদান করেন।

মন্ত্রী পর্যায়ের সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশ ডি-৮ এর সভাপতি হিসেবে আজ হাইব্রিড ফরম্যাটে ২০তম ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভার আয়োজন করেছে। তিনি বলেন, দশম শীর্ষ সম্মেলনে ডি-৮ নেতৃবৃন্দের গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি ২০তম ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় পর্যালোচনা করা হয়। সভায় ডি-৮ মহাসচিব, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে বিগত বছরে গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।

ড. মোমেন বলেন, এবারের ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় ডি-৮ সদস্য দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষত বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্প সহযোগিতা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, পরিবহন, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ এবং পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ এ ছয়খাতে ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী চলমান জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে জ্বালানি খাতে ডি-৮ দেশসমূহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীগণ ১ম জ্বালানি বিষয়ক ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ডি-৮ একটি অর্থনৈতিক জোট। প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে ডি-৮ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠাকালীন ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৪ বিলিয়ন ডলার যা বর্তমানে ১২৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে মিশর ব্যতীত অন্যান্য সাতটি সদস্য দেশ ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি অনুসমর্থন করেছে। মিশর শীঘ্রই ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে অনুসমর্থন প্রদানের বিষয়ে এবারের সভায় জানিয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। এছাড়া ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত কার্যকর করার লক্ষ্যে ড্রাফ্ট ট্রেড ফেসিলিটেশন স্ট্রাটেজি – এর চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়া চলছে। এবারের সভায় এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয় এবং শীঘ্রই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য ৩য় বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় এই ড্রাফ্ট ট্রেড ফেসিলিটেশন স্ট্রাটেজি গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমরা ডি-৮ প্রতিষ্ঠার পঁচিশ বছর পূর্তি উদযাপন করছি। এই শুভলগ্নে, ডি-৮ এর সদস্যপদ লাভের জন্য আজারবাইজান আবেদন করেছে। এবারের সভায় আজারবাইজানের ডি-৮ সদস্যপদের আবেদনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় ডি-৮ এ নতুন সদস্যরাষ্ট্র অন্তর্ভূক্তির নীতিমালা প্রণয়ণের জন্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহের নিকট মতামত প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়াও, নাইজেরিয়ার প্রস্তাবিত ডি-৮ ইয়ুথ কাউন্সিল গঠনের বিষয়েও সভায় আলোচনা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেছিলেন এবং ইতোপূর্বে বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনটি সফলভাবে আয়োজন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ এপ্রিল ২০২১ তারিখে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট- এর নিকট হতে ডি-৮ এর সভাপতিত্ব গ্রহণ করেন।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন