- দেশের বাজারে প্রভাব নেই
বিশ্ববাজারে কমছে স্বর্ণের দাম। প্রায় ছয় মাসের মধ্যে স্বর্ণের দাম নেমেছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। তবে দেশের বাজারে দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। স্বর্ণের পাশাপাশি গত একমাসে রুপা ও প্লাটিনামের দামও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। একমাসের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমেছে ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। রুপার দাম কমেছে ১০ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর প্লাটিনামের দাম কমেছে ১৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
একমাস আগে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১৮৬৮ দশমিক শূন্য ৯ ডলার। সেখান থেকে কমতে কমতে এখন তা দাঁড়িয়েছে ১৮১০ দশমিক ১৮ ডলারে। অর্থাৎ একমাসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ৫৭ দশমিক ৫১ ডলার। এরমধ্যে গেলো সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে ১৬ দশমিক শূন্য ৭ ডলার বা দশমিক ৮৮ শতাংশ।
গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স রুপার দাম কমেছে ১ দশমিক ২৪ ডলার বা ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৮৭ ডলারে। আর প্লাটিনামের দাম গেলো সপ্তাহে কমেছে ১৮ দশমিক ৫১ ডলার বা ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৮৯ ডলারে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুট করে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান, এরপর আবার বড় দরপতনের ঘটনা ঘটছে গত কয়েক মাস ধরেই।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। রাশিয়া হামলা শুরুর পর ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ব অর্থনীতিও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। হু হু করে বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু পর প্রথম সপ্তাহেই বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪ দশমকি ৩৭ শতাংশ বা ৮২ দশমিক ৪৮ ডলার বেড়ে যায়। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৭০ দশমিক শূন্য ৭ ডলারে উঠে যায়।
যার প্রেক্ষিতে ৩ মার্চ বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। সেসময় সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ২৬৫ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৭৮ হাজার ২৬৫ হাজার টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৯১ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ৭৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ১৫২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ২১৬ টাকা বাড়িয়ে ৫৩ হাজার ৪২১ টাকা করা হয়।
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পর এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়ে দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। ফলে ৯ মার্চ দেশের বাজারে আবার বাড়ানো হয় স্বর্ণের দাম। এ দফায় ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৭৯ হাজার ৩১৫ হাজার টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার ৬৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮১৬ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৬৪২ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫৪ হাজার ৬২ টাকা। অবশ্য এরপর বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণ। ফলে ১৬ মার্চ এবং ২২ মার্চ দু’দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। এর মধ্যে ২২ মার্চ সবচেয়ে ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে করা হয় ৭৭ হাজার ৯৯ টাকা।
এছাড়াও ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৭৩ হাজার ৬০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৩ হাজার ১০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৪৫৮ টাকা কমিয়ে ৫২ হাজার ৬০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর রোজা শুরু হলে দেশের বাজারে ঈদকেন্দ্রিক স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি কিছুটা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে দামেও। বিশ্ববাজারে খুব একটা দাম না বাড়লেও ১২ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৮৪৯ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস।