শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মা সেতু অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতু অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে

নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধ, এরপর বন্যা- সব মিলিয়ে বিশ্বঅর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদশও কিছুটা সংকটে পড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে সবার সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল আছে।

সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনুদানের চেক হস্তান্তর করে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুদান গ্রহণ করেন।

সদ্য চালু হওয়া পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতু চালু হওয়ায় শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, পরিবর্তন আসবে সারাদেশের অর্থনীতিতে। সরকার সারাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা রেল যোগাযোগ পুনরুজ্জীবিত ও নতুন নতুন রেলপথ স্থাপন করছি। সেতু নির্মাণের পাশাপাশি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীগুলো খনন করছি। শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে বলেন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে সাহসিকতা ও সাফল্যের দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, আমাদের দেশেরই এক ব্যক্তির প্ররোচণায় বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, পাশাপাশি অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগিরাও সরে দাঁড়ায়, তখন আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবো। তখন দেশের জনগণের পাশাপাশি আপনারাও অনেকে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

আরও পড়ুনঃ  চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ‘করোনার ক্যাপসুল’ সেবন না করার পরামর্শ

দেশের জনগণকে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের সাহস এবং সহযোগিতা এবং তারা পাশে থাকাতে আমরা আমাদের নিজস্ব টাকায় এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল অঞ্চল যেটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল সেখানে এখন শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই অঞ্চলের মানুষের আর্থিক উন্নতি হবে। সেখানেও আপনাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাত করার একটি ক্ষেত্র তৈরি হবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে এবং এই অঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে যাবে।

বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বরেন, প্রথমবার সরকারে আসার পর তাঁর সরকার যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু নির্মাণ করেছিল যেখানে বিদ্যুৎ, রেল এবং গ্যাস সংযোগও প্রদান করা হয়। পদ্মা সেতুটাও সেভাবেই করা হয়েছে, মাল্টিপারপাস। সেখানেও গ্যাস, বিদ্যুৎ, রেল সংযোগের সঙ্গে অত্যাধুনিক ওয়াইফাই সুবিধা থাকবে।

বন্যার্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এর সদস্য এনআরবি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংকের মো. জামিল ইকবালসহ ৪৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে মোট ৩০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করে।

অনুদান প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিডিবিএল, ইডকল, বিআইএফএফএল, এক্সিম ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক।

আরও পড়ুনঃ  ভোলায় মা ইলিশ ধরতে চান না জেলেরা

এছাড়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, যমুনা ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোসাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড তাদের অনুদান চেক হস্তান্তর করে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন