শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেতুর চাপে চ্যাপ্টা রাজধানী

সেতুর চাপে চ্যাপ্টা রাজধানী
  • উৎসুক দর্শনার্থী-ভ্রমণপিয়াসীরা ছুটছেন পদ্মা সেতুতে

উদ্বোধন শেষে গতকাল রবিবার সকালে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয়। সকাল ৬টা থেকেই যানবাহনের জটলা তৈরি হয় সেতুর দুই প্রান্তে। ওই জটলার প্রভাব পড়েছে ঢাকাতেও। যান চলাচলের প্রথম দিন অনেকেই যাচ্ছেন পদ্মা সেতু পরিদর্শনসহ ব্যাপক উচ্ছ্বাসে গ্রামের বাড়িতে।

ফলে রাজধানীর থেকে মাওয়ামুখী বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। সকাল থেকেই মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, গুলিস্থান, বাবু বাজার ব্রীজ, চানখারপুল, মগবাজার, রামপুরা সহ বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

নাজির উদ্দিন নামে এক ভ্রমণপ্রিয়সী তার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সকাল ৮টার দিকে যান পদ্মা সেতু দেখতে। নাজির উদ্দিন বলেন, সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে বড় ধরনের যানজটে পড়েছি। সেখানের যানজটে অনেক সময় নষ্ট হয়। এরপর পদ্মা সেতুর প্রায় ৫ কিলোমিটার আগেই পড়তে হয় ফের যানজটে। এটি ঠেলে সেতুর সামনে যেতে প্রায় এক ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় নষ্ট হয়। পরে সেতু পার হয়ে জাজিরা যাই। সেখানে কিছুক্ষণ ঘুরে পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে জাজিরা থেকে রওনা হই। ফেরার সময়ও একই যানজটে পড়তে হয়। জাজিরা থেকে সেতু পযর্ন্ত বেশকিছু স্থানে যানজটে পরতে হয়। সেতুর পার হবার পরেও তীব্র যানজটে পড়েছি। এরপর ঢাকাতে ফিরেও বড় ধরনের যানজটের মুখে পড়তে হয়।

যানজটের একই ভোগান্তি আরেক ভ্রমণপ্রিয়সী মারুফ বলেন, সকালে মোটরবাইক নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে যায়। ঢাকা থেকে বের হবার সময় পরতে হয় বড় যানজটে। এরপর সেতুর আগেই তীব্র যানজট ঠেলে শিবচর পযর্ন্ত ঘুরে আসি। পরে ঢাকায় ফিরতেও দেখি একই যানজট। তাও আবার ঢাকার ভিতরেই। এভাবে পুরো ভ্রমনে যানজটই কেড়ে নিলো তিন ঘণ্টা।

আরও পড়ুনঃ  পদ্মা সেতুতে ৩২তম স্প্যান বসছে আজ

যাত্রাবাড়িতে এক ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতুতে যান চলাচল উন্মুক্ত হওয়ার কারণে সেতু পরিদর্শনে ভ্রমণপ্রিয়সীদের চাপ বাড়ে। যে যার মতো করে বিভিন্ন যানবাহনে ছুটে যাচ্ছেন সেতুতে। ফলে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে ও নিচে সড়কগুলোতে বাড়তি গাড়ির চাপ পড়ে। ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বাবুবাজার ব্রিজেও একই যানজট সৃষ্টি হয় বলেও জানায় ট্রাফিক পুলিশ আরেক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যানবাহনের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে গুলিস্থান অংশে প্রাইভেটকারের যাত্রী এহসান সিদ্দিক বলেন, যাচ্ছি মাদারিপুর গ্রামের বাড়িতে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে, তাই তরও সইছে না। তড়িঘড়ি করেই পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে বাড়ি যাব। সকালেই রওনা হয়েছি। বড় ধরনের যানজটে পড়েছি। মগবাজার থেকে গুলিস্থান আসতে যানজটে দেড় ঘণ্টা কেড়ে নিল। একই অভিজ্ঞতা প্রাইভেটকার চালক আসিফ রহমান, পদ্মা সেতুতে উঠব, সেলফি তুলব, পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে বাড়ি যাব। অনুভূতি নিয়ে রওয়ানা দিয়েছি। কিন্তু মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে বুড়িগঙ্গা পযর্ন্ত যানজট ঠেলে আসতে লাগে ঘন্টা খানিক।

যানজট প্রসঙ্গে লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের ফুলবাড়িয়া জোনের সহকারি কমিশনার সালাহউদ্দিন বলেন, সকাল ফুলবাড়িয়ায় ফ্লাইওভারের ওপর-নিচে উভয় অংশে যানবাহনের চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি চাপ কমিয়ে আনতে।

লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মেহেদি হাসান বলেন, সড়কে ও ফ্লাইওভারে প্রেশার রয়েছে। অনেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার ব্যবহার করে বাড়ি যাচ্ছেন, কেউ ঘুরতে যাচ্ছেন পদ্মা সেতুতে। ফলে চাপ পড়েছে ফ্লাইওভারে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন