শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুললো শত-সহস্র স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দুয়ার

খুলে গেলো আরও শত সহস্র স্বপ্নের দুয়ার

বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো। উন্মোচিত হলো যোগাযোগের নতুন দিগন্ত। এ যেন বাঙালির স্বপ্ন ও সাহসের জয়। সেই সঙ্গে খুলে গেলো আরও শত সহস্র স্বপ্নের দুয়ার।

সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনসহ সবাই বলছেন, নিজেদের টাকায় তৈরি পদ্মা সেতু দেশের উন্নয়নে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। অবসান হবে দীর্ঘদিনের যোগাযোগের ভোগান্তি। একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। অবহেলিত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়ে উঠবে শিল্প-কারখানা। ঘুচবে বেকারত্বের অভিশাপ।

শনিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে টোলপ্লাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি। সেখানে টোল দিয়ে মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করে মোনাজাতে অংশ নেন। এর মাধ্যমেই খুলে যায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের সড়ক পথের দ্বার।

দুইপাড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও চাষিরা বলছেন, সেতুর ফলে আমরা অনেক লাভবান হবো। যাতায়াতের সুবিধায় সম্প্রসারিত হবে ব্যবসার পথ। ফলে সচল হবে অর্থনীতির চাকাও। সাধারণ মানুষ কৃষিপণ্য কম দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করতে পারবে।

চাষিরা জানান, পদ্মাপাড়ে নানা ধরনের শাক-সবজি হয়। এসব সবজি ঢাকায় নিতে আগে লাগতো কয়েক ঘণ্টা। অথচ এখন কম সময়ে ঢাকায় নেওয়া যাবে।

শুধু পদ্মারপাড় নয়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়ও প্রভাব পড়েছে এর। নড়িয়া পৌরসভার শুভগ্রাম, বাড়ইপাড়া, বিসমিল্লাহনগর, বৈশাখীপাড়া, ঢালিপাড়া ও বাঁশতলায় এক কড়া জমি ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানে নানা ধরনের ফাস্টফুডের দোকান তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ছোট ছোট বিপণি-বিতান।

আরও পড়ুনঃ  বাজেটে দ্বিগুণ বরাদ্দে বাড়বে স্বাস্থ্যসেবার মান

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মা সেতুর কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ২ শতাংশের কাছাকাছি। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতুর ফলে আমাদের বিনিয়োগ, বিতরণ ও বিপণনগুলোতে যে সাশ্রয় হবে, সেটা অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এরই মধ্যে পদ্মার করিডোরের পাশ দিয়ে বিনিয়োগের বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড দেখা যাচ্ছে। এসব বিনিয়োগে যে কর্মসংস্থান হবে, সেগুলো আমাদের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে।

অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, ২০২৭ সালে জিডিপিতে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ অবদান রাখবে এই পদ্মা সেতু। ওই সময় দেশের জিডিপির আকার হবে ৬৩ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬ লাখ কোটি টাকা হবে দক্ষিণাঞ্চলের কারণে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন