মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুর্ভোগে লাখো মানুষ

মহাসড়কে ময়লার ভাগাড়

মহাসড়কে ময়লার ভাগাড়

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ত্রিশাল পৌরসভার নওধার এলাকায় সুতিয়া নদীর ধারে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার স্তুপ। পৌর এলাকার এই ময়লার দুর্গন্ধে আশপাশের হাসপাতাল, স্কুল, মাদ্রাসা ও সাধারন মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখাযায়, ত্রিশালের পৌর কর্তৃপক্ষই প্রতিদিন মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলছে। মহাসড়ক ঘেঁষে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ড ছিল। সেই সাইনবোর্ডও যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। ত্রিশাল পৌরসভা থেকে প্রতিদিনই ময়লা ফেলা হচ্ছে সুতিয়া নদীর ধারে। ত্রিশাল বাজার থেকে নওধার হয়ে যে রাস্তাটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মিশেছে, সেই স্থানেই এই ময়লার স্তুপ। ময়লার দুর্গন্ধে দুটি রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী লোকজনকে রুমাল বা কাপড়ে মুখ চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। পাশেই রয়েছে হাসপাতাল ও মাদ্রাসা যেখানে রয়েছে রোগীসহ শতশত শিক্ষার্থী। এখানে ফেলা ময়লাগুলো আবার নদীর পানির সঙ্গে মিশে পানিকেও দূষিত করছে। পাশপাশি কঠিন বর্জ্য নদীতে পড়ছে বলে নদীও ভরাট হচ্ছে ক্রমেই।

স্থানীয় নওধার এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ময়লা এখানে ফেলা হচ্ছে। ময়লাগুলো নদীর ধারে এবং রাস্তার কিনারে ফেলার কারনে পানি ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শতশত রোগী ও বড় একটি মাদ্রাসা রয়েছে। আশপাশের লোকজনকে মুখে হাত চেপে বা রুমাল ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) ময়লা ফেলতে নিষেধ করে তাদের পক্ষ থেকে একটি সাইনবোর্ড টানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সাইনবোর্ড এখন আর নেই কে যেন নিয়ে গেছে।

আরও পড়ুনঃ  চাটমোহরে মাদ্রাসার আয়া-নৈশ প্রহরী নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁস

স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাফওয়ান সাদাত বলেন, আমি এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাই। এ ময়লার দুর্গন্ধ অনেক খারাপ লাগে। এখানে এসেই নাক চেপে রাস্তা পাড় হই।

পৌর ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আওলাদুল ফরহাদ বলেন, বিধি নিষেধ সত্তেও পৌরসভার বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে দুর্গন্ধের কারনে সকলের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। লোকালয় থেকে দূরে কোথাও এই ময়লা পরিবেশসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ করা উচিত। সম্ভব হলে এগুলোকে রিসাইকেল করে জৈব শক্তিতে রূপান্তর করা যেতে পারে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকী বলেন, আমরা বুঝে না বুঝেই এভাবে যত্রতত্র ময়লা, আবর্জনা ফেলছি। এভাবে ময়লা, আবর্জনা ফেলে আমরা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছি। অথচ পরিবেশসম্মত উপায়ে লোকালয় থেকে দূরে এগুলো সংরক্ষণ করে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে দূষণ কমানো সম্ভব। সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা অনেক শিক্ষিত ও ধনী হচ্ছি কিন্তু সচেতন হচ্ছি না।

ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান বলেন, পৌরসভার বর্জ্য ফেলার জন্য এখনো নির্দিষ্ট কোনো জায়গা করতে পারিনি। তবে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের জন্য পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নামাপাড়া পাঁচ একর জায়গা অধিগ্রহণের জন্য দেখা হয়েছে। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন