শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালু ব্যবসা কেন্দ্র করে হামলায় গুলিবিদ্ধ ১২

বালু ব্যবসা কেন্দ্র করে হামলায় গুলিবিদ্ধ ১২

নরসিংদীর রায়পুরার আমিরগঞ্জে বালু ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ১২ জন গুলিবিদ্ধ ও ২ জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের নলবাটা গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাদের সবাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ ও টেঁটাবিদ্ধ ১৪ জন হলেন, রায়পুরার আমিরগঞ্জের নলবাটা এলাকার আবদুল মোতালিবের ছেলে মো. মোহসিন (২০), আওলাদ হোসেনের ছেলে রিমন হোসেন (১০), নুরে আলমের ছেলে মো. মুন্না মিয়া (১২), আফাজউদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন (৩৪), শাজাহান মিয়ার ছেলে শাহালম মিয়া (৩০), আবদুল মিয়ার ছেলে খোরশেদ মিয়া (৪৫), ইদ্রিস আলীর ছেলে ইলিয়াস আলী (৫০), ইমান হোসেনের ছেলে আশিক হোসেন (২৩), মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে মোতালিব (৭০), জুয়েল মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩২), আবদুল হাকিমের ছেলে ছাত্তার (৫০), আবুল হোসেনের স্ত্রী রোফেজা বেগম (৩২), মোক্তার হোসেনের ছেলে শাহীন মিয়া (১৬)।

আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি সদস্য গুলজার হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ওরফে রবির স্থানীয়ভাবে বালুর ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাদের দ্বন্দ্বের জের ধরে কিছুদিন পরপরই এই গ্রামে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জের ধরেই সোমবার ভোরে গুলজার হোসেনের সমর্থকদের বাড়িঘরে অতর্কিত হামলা চালায় রফিকুল ইসলাম ওরফে রবির সমর্থকরা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই রায়পুরার আমীরগঞ্জের নলাবাটা গ্রামের রবি গ্রুপ ও গোলজার গ্রুপের বিরোধ চলছে। গত কয়েক বছরে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত মাসেও একাধিকবার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল এই দুই গ্রুপের মধ্যে।  সোমবার ভোর ৫টার দিকে রবি গ্রুপের শতাধিক সমর্থক আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে গোলজার গ্রুপের সমর্থকদের বাড়িঘরে এসে হামলা চালায়। এ সময় উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে নারী ও শিশুসহ ১৪ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ১২ জন ছিটাগুলিবিদ্ধ ও ২ জন টেঁটাবিদ্ধ হন।

আরও পড়ুনঃ  স্ত্রী-শাশুড়িসহ ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যা, অভিযুক্ত আটক

পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন ও স্বজনরা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান। খবর পেয়ে রায়পুরার আমিরগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফজলুল কাদের জানান, রায়পুরার নলবাটা এলাকার নারী ও শিশুসহ মোট ১৪ জন আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন ছিটাগুলিতে বিদ্ধ ও ২ জন ছিলেন টেঁটাবিদ্ধ। এসব গুলি ও টেঁটা তাদের শরীর থেকে অপসারণের জন্য আমরা তাদের সবাইকে ঢাকায় পাঠিয়েছি।

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, এ হামলার ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ  ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে। আহত ব্যক্তিরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন