বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বপ্নের ঠিকানা ‘জয় বাংলা ভিলেজ’

স্বপ্নের ঠিকানা ‘জয় বাংলা ভিলেজ’
  • বিরামপুরে ভূমিহীনদের সুখের আশ্রয়

সবুজের ছায়া ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের জয় বাংলা ভিলেজের সারি সারি ঘর। সুন্দর এবং মজবুত এসব ঘরের সামনে-পেছনে নানা জাতের সবুজ বনানীর শীতল ছায়া। প্রতিটি ঘরের সামনে যার যার সীমানার খোলা জায়গায় কেউ বাগান করেছে। কেউ করেছে সবজি চাষ, কেউ আবার নিজের ঘরটির সামনে রঙিন তোরণ নির্মাণ করে আরো দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। সীমানার সামনে রাস্তা এবং রাস্তার পাশে সারি সারি গাছ। রয়েছে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধা। এ প্রকল্প যেনো সুবিধাভোগীদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বিশুদ্ধ পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে প্রতি ১০ পরিবারের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি করে গভীর নলকূপ।

অনেক পরিবার হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু পালন করে। এসব পরিবারের অভিভাবকরা কেউ ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ইজিবাইক চালক, কৃষি শ্রমিক, দৈনিক মুজুরিভিত্তিক শ্রমিক। করোনা মহামারিতে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অভাবে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লেও বাসস্থান পাওয়ায় তারা খুশি। জমিসহ প্রাপ্ত ঘর এখন অসহায় মানুষগুলোর নিজস্ব সম্পত্তি।

সরজমিনে জয় বাংলা ভিলেজ: খাঁনপুর-৩ বুচকি, কুর্শাখালী এলাকার সুবিধাভোগী সুমন বলেন, আমাদের এখানকার ঘরগুলো বেশ টেকসই। কিছু জেলার যে সব কথা শুনেছি তাতে আমরা চিন্তায় ছিলাম। সে তুলনায় আমাদের সব ঘর সুন্দর এবং ভালোমানের। আমার দুই মেয়ে এক ছেলে মোট তিন সন্তান এবং আমার স্ত্রীকে নিয়ে এখানে বসবাস করছি। ঘরের চালে লাউ গাছ লাগিয়েছি সেটা দিয়ে নিজেদেরে খাবারের চাহিদা কিছুটা পুরন করতে পারি। এছাড়াও রয়েছে করলার গাছ এবং কিছু শাকসবজির গাছে। এই নিয়ে ভালোই আছি।

আরও পড়ুনঃ  সংকটাপন্ন অবস্থায় ডা. জাফরুল্লাহ

সুবিধাভোগী রেখা বেগম বলেন, আমি নামাজ পড়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি। তার দানে আল্লাহর রহমতে আজ আমরা সুখে আছি। আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবী করেন। আমার এখন ২টি গরু এবং ১টি ছাগল আছে সেগুলো লালন পালন করছি। সব মিলে ভালো আছি।

এরই মধ্যে একজন আবার তার ঘরের বারান্দায় ছোট্ট একটি নিত্যপণ্যের দোকান দিয়েছেন। সেই দোকানকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে আড্ডা।

বিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাওছার আলী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আমরা দু‘দফায় ২২০টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। এর মধ্যে ১৯৫টি ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে প্রতি পারবারে ২ শতাংশ জমিসহ ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাঁকি ঘরগুলোর মধ্যে ৬টি ঘরের নির্মাণ প্রক্রিয়া চলমান আছে। কাজ শেষ হলেই তা হস্তান্তর করা হবে।

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, আমরা নিজেদের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করেছি। আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার (বাসস্থান) শতভাগ ত্রুটিমুক্ত করার। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আশ্রয়ণ পপ্রল্পে সুবিধাভোগী পরিবারগুলোর সন্তানরা যাতে লেখাপড়া শিখতে পারে। সে জন্য ঘরগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আসেপাশেই নির্মাণ করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু বলেন, ঘরগুলো নির্মাণে আমরা নিজেরাই সব সময় তত্ত্বাবধান করেছি। চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার (ঘর) শতভাগ ত্রুটিমুক্ত ও ভালো করার জন্য। ‘দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই প্রত্যয়ে তার আবেগের প্রকল্প আশ্রয়ণের মাধ্যমে দুই ধাপে ঘর পেয়েছেন এক লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার। তৃতীয় ধাপে ঘর পাবে আরও ৬৫ হাজার ৪৭৪টি পরিবার। এতে দুই শতক জমির মালিকানাসহ সেমি পাকা ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মতো সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যও রয়েছে ঘর দেওয়ার প্রকল্প। এতে বদলে যাচ্ছে তাদের জীবন যাত্রার মান। উঠে আসছে সমাজের মূলস্রোতে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন