শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহ্যের বিদ্যালয়ে চক্রের থাবা

ঐতিহ্যের বিদ্যালয়ে চক্রের থাবা
  • জমি দখলে ‘প্রবাস’ থেকেই সাইনবোর্ড

সমাধানে আইনিভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে

সহকারি কমিশনার (ভূমি), আজমিরীগঞ্জ

হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিরাট এমালগেমেটেড বীর চরণ সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। রাতের অন্ধকারে ওই জায়গায় সাইনবোর্ড ও বেড়া দিয়ে জায়গাটি দখলের নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে চক্রটি। এ নিয়ে সচেতননবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। তবে আজ বৃহস্পতিবার জমি পরিমাপ করে আইনিভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এর আগে গত সোমবার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত অবৈধ সাইনবোর্ড ও বেড়া অপসারণ করা হয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে গত রবিবার সাইনবোর্ড ও বেড়া অপসারণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান মোস্তাফা।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওই জায়গায় রাতের অন্ধকারে ‘মো. মফিজুল ইসলাম, গ্রাম- শুক্রীবাড়ি, আজমিরীগঞ্জ সদর’ লেখা সাইনবোর্ড টানিয়ে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে। এতে যা বলা হয়েছে তা আইনের পরিপন্থী। ১৯৩০ সালে স্থাপিত এ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে এক সময়ে দুটি ছাত্রাবাস ছিল। যার স্বাক্ষী হিসেবে বর্তমানেও ওখানে চার কক্ষবিশিষ্ট একটি শৌচাগার রয়েছে। বর্তমানে ছাত্রাবাস না থাকলেও প্রতিবছর বিদ্যালয় থেকে ভূমি চাষের জন্য প্রকাশ্যে নিলামের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করা হয়। এ অবস্থায় অবৈধভাবে স্থাপিত সাইনবোর্ড ও বেড়া অপসারণের দাবিতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

আরও পড়ুনঃ  বাউফল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ

প্রধান শিক্ষক আহসান মোস্তাফা অভিযোগ করে জানান, লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর গত সোমবার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু এখনও ওই সাইনবোর্ড ও বেড়া অপসারণ করা হয়নি। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি ভাটি এলাকার একটি ঐতিহ্য। দীর্ঘদিন ধরে ভাটি এলাকার কয়েক জেলার মানুষ এই বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছেন। এভাবে রাতের অন্ধকারে সাইনবোর্ড ও বেড়া দিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি দখল হওয়া মেনে নেয়া যায় না।

স্থানীয়রা জানান, যার নামে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে, তিনি প্রবাসে থাকেন। অথচ, তার পক্ষে রাতের আঁধারে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট জায়গাটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে। মোটা অংকের টাকায় বশিভূত হয়ে স্থানীয় চক্র তাকে সহযোগিতা করছে।

সাইনবোর্ডে উল্লিখিত মফিজুল ইসলামের শ্যালক আক্তার হোসেন এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, এই জমির মালিক আমার বোনজামাই মফিজুল ইসলাম। তার নামে দলিল আছে। নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করা হচ্ছে। তার দাবি- বিদ্যালয় ও ওই জমি পৃথক মৌজায় অবস্থিত।

সহকারি কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে তিনি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শান্তিপূর্ণ অবস্থাবিরাজ করার জন্য উভয় পক্ষকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপ করে আইনি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন