খালে বিলে জোয়ারের পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে পানকৌড়ির ব্যাপক আগমণ ঘটছে। বিভিন্ন খাল, ডোবা, বিল ও পুকুরের পানিতে দল বেঁধে পানকৌড়ির দল ছোট ছোট মাছ শিকার করছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই এলাকার বিভিন্ন উঁচু গাছপালায় গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। লোকালয় ও জলাধার সংলগ্ন গাছের মগডালে বাঁধছে বাসা। এসব পানকৌড়ির কিচিরমিচির শব্দে পুরো এলাকা কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠছে। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিখ্যাত আঁড়িয়াল বিলসহ বিভিন্ন স্থানে জলাশয়ের খুব কাছাকাছি অতিথি উঁচু গাছে পানকৌড়িদের অস্থায়ীভাবে আবাসন গড়ে তুলতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্ষার আগমনে ইতিমধ্যেই উপজেলার খাল-বিল, পুকুর ও জলাশয়গুলোতে জোয়ারের পানি দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আহার সংগ্রহে অল্প পানিতে পানকৌড়িরা ডুবিয়ে ডুবিয়ে মাছ শিকার করছে। সন্ধ্যার সাঁজ পরতেই শিকারি পানকৌড়ির দল নিজ নীড়ে ফিরছে। লক্ষ্য করা গেছে, আড়িয়াল বিল এলাকার গাদিঘাট, শ্রীনগর সরকারি কলেজ, কুকুটিয়ার এলাকার বিবন্দী বাজারসহ বেশ কয়েক স্থানে উঁচু কড়ই গাছে এসব পানকৌড়িরা বাসা বেঁধেছে। গাছের চুড়ায় পানকৌড়ির শত শত বাসা। এসব পানকৌড়ির হাকডাক ও কলরব শব্দ অনেক দূর থেকেই শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়রা পানকৌড়িকে কাউপানি নামেও ডাকেন। পানকৌড়ির হাকডাক ও গাছে ডানা মেলে রোদে গা শুকানোর দৃশ্য সচরাচর এখন আর চোখে পরেনা। পানকৌড়ির মিলন মেলার এমন অপরুপ নজরকারা দৃশ্য উপভোগ করতে অনেক পথচারী কিছুক্ষণের জন্য দাড়িয়ে পড়ছেন।
স্থানীয়রা জানায়, এখানকার খালে বিলে এখন জোয়ারের টলটলে নতুন পানি ডুকছে। এরই মধ্যে পানকৌড়িরা দলে দলে আসতে শুরু করছে। এ মৌসুমে অতিথি পানকৌড়িরা বাসা বাঁধছে। কিছুদিনের মধ্যে পানকৌড়িরা এসব বাসায় বংশ বিস্তার করবে। কয়েক মাসের ব্যবধানে এসব পানকৌড়ির সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে যাবে। তখন হাজারো পানকৌড়ির মিলনমেলায় পরিণত হবে। এদের হাকডাকে আশপাশ মুখরিত হয়ে উঠবে। কার্তিক মাস পর্যন্ত এসব পানকৌড়ির দল এখানেই থাকবে। খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ার আগমূহুর্ত পানকৌড়িরা অন্য কোনও অঞ্চলে চলে যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীনগর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গাছে বছরের ১২ মাসই পানকৌড়ির বসবাস রয়েছে। এখানে কলেজ ক্যাম্পাস জুড়ে রীতিমত হাজারো পানকৌড়ির স্থায়ী আস্তানা গড়ে উঠেছে।