শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশি লিচুর উৎপাদন বেশি

দেশি লিচুর উৎপাদন বেশি

লিচুর বাম্পার ফলন

  • দাম হাতের নাগালে
  • লিচুর শ এক থেকে দেড়শ টাকা

বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ ও কৃষক পর্যায়ে লিচু গাছ বেশি রোপিত হওয়ায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বিগত বছরের চেয়ে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে দেশি বোম্বাই লিচুতে বর্তমানে বাজার সয়লাভ হয়ে গেছে। দেশী লালচে রংয়ের ভালো মানের প্রতি ১০০ লিচু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। প্রচুর দেশী লিচু বাজারে আসায় লিচুর দাম গ্রাহক পর্যায়ে সন্তোষজনক হওয়ায় এটি এখনও পর্যন্ত মানুষের হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।

তবে, কিছু অপরিপক্ক চায়না লিচু বাজারে আসলেও এখনও ভালো মানের চায়না লিচু বাজারে আসেনি এবং রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের লিচু এ ময়মনসিংহ অঞ্চলের এখনও প্রবেশ করেনি। পরিপক্ক অবস্থায় এটি আসতে আরো ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার একজন ভ্রাম্যমাণ লিচু ব্যবসায়ী মিরাজ আলী বলেন, আমি ফুলপুর উপজেলা থেকে প্রতি ১০০ লিচু ১৩০ টাকা দরে ক্রয় করে এটি বিভিন্ন বাজারে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দর পর্যন্ত বিক্রি করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ফুলপুর অঞ্চলের লিচুও বাজারে আসতে শুর করেছে। বর্তমানে আমি দিনে ১০ থেকে ১৫ হাজার লিচু বিক্রি করে থাকি।

নালিতাবাড়ীর সোহাগপুর গ্রামের লিচু গাছ মালিক মোকছেদ হাওলাদার বলেন, ২০ বছর পূর্বে রোপিত আমার ৩টি দেশী লিচু গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে কম করে হলেও ৪ থেকে ৫ হাজার লিচু আসে। এ লিচু স্থানীয় বাজারে ধীরে ধীরে বিক্রি করি। এছাড়াও প্রতিবন্ধকতা হিসাবে লিচু পাকতে শুর করলেই বাদুড়ের উৎপাত ও পোকার আক্রমণ বেড়ে যায়। বাদুর খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। আর পোকা ধরে লিচুর গোড়া হতে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও দমন করা যায় না। পোকা ও বাদুড়ের কারণে জাল দিয়ে কোনো রকমে ঘিরে রাখতে হয়। ফলটি সুস্বাধু হওয়ায় লিচুর ক্ষতি হয়ই। তবে বিদেশি লিচুর কথা ভিন্ন। এছাড়াও লিচুর যত্নেও সচেতন থাকতে হয়। লিচু গাছে মুকুল আসার আগেই গাছের গোড়ায় গোবর সার প্রয়োগ করি এবং পানির পর্যাপ্ততা দেখতে হয়। ফল ধরার সময় পর্যন্ত কীটনাশক দিতে হয়। তবে গাছে পরিচর্যা করলে, গাছ ফল দেয় এবং আয় আসে। আর বর্তমানে গ্রামগুলিতে এমন কোনো বাড়ি নেই যে, লিচুগাছ নেই। অনেকে বাণিজ্যিক লিচুর বাগান করে ফেলেছে। সেই কারণে বর্তমানে লিচুর আমদানি বেশি এবং দাম কম।

আরও পড়ুনঃ  আত্রাইয়ে দুই দফতর থেকে ১৩ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ

ক্রেতা আমির হোসেন বলেন, দেশী লিচুর বেশি আমদানী ও উপাদন বেশি হওয়ায় বিগত বছর গুলির চাইতে এবার আমরা বাজার হতে খুবই কম দামে লিচু ক্রয় করে খেতে পারছি।

ময়মনসিংহ অঞ্চলের হর্টিকালচার বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশী লিচু উৎপাদন বেশি হওয়ায় এটি এখন মানুষের হাতের নাগালে রয়েছে এবং মানুষ খেতে পারছে। তবে কৃষি বিভাগে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা থাকলেও লিচুর বাজার সহিঞ্চু অবস্থায় থাকায় কৃষি বিভাগ যথার্থই মনিটরিং করে যাচ্ছে। তবে এর অস্বাভাবিকতা আসলে আমরা অবশ্যই বিষয়টি দেখবো। এদিকে আমরা আমাদের ইর্টিকালচার বিভাগের উন্নত জাতের ও ভালো মানের লিচুর চারা প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষককদের মাঝে রোপন করার জন্য কৃষক পর্যায়ে দিয়ে যাচ্ছি। এ চারাগুলো থেকে আরো বেশি ফলন হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন