শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেলে প্রথম জরুরি রোগীসেবা

রেলে প্রথম জরুরি রোগীসেবা
  • অ্যাম্বুলেন্স সেবার যাত্রা শুরু চট্টগ্রাম থেকে

রেলপথে রোগী বহনের জন্য এবার দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে রেল অ্যাম্বুলেন্স। এটি যাত্রা শুরু করবে চট্টগ্রাম থেকে। বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রাথমিকভাবে রেলের একটি মিটারগেজ কোচে এই অ্যাম্বুলেন্স চালু করবে। যেখানে থাকবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি আইসিইউ সুবিধা। আর উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করছে স্কয়ার হাসপাতাল। রেলওয়ে সূত্রমতে, প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে রেলওয়ের কারখানায় একটি এয়ারব্রেক সংবলিত কোচ নির্ধারণ করে মডিফিকেশন কার্যক্রম চলছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে রেলওয়ে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও এখন মিলবে সেবাটি। এটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে আরও রেল অ্যাম্বুলেন্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী-স্কয়ার হাসপাতাল যে নকশা প্রস্তাব করেছে সেখানে তিনটি আইসিইউ, ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্ট ইউনিট, সংশ্লিষ্ট ইক্যুইপমেন্ট ইউনিট, চিকিৎসকদের চেম্বারসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা রাখা হবে রেল অ্যাম্বুলেন্স। বাংলাদেশ রেলওয়ে বহরে প্রথমবারের মতো যুক্ত হওয়া অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবায় একজন মুমূর্ষু রোগী একটি আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে যেসব সুবিধা পান তার সবই পাবেন।

জানতে চাইলে রেল অ্যাম্বুলেন্স উদ্যোগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী জানান, বিশ্বের অনেক দেশেই এই ব্যবস্থা রয়েছে। পাশের দেশ ভারতে মেডিক্যাল ট্রেন আছে, যেখানে অপারেশন থিয়েটারও রয়েছে। এবার বাংলাদেশ রেলওয়ে এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মিটারগেজ একটি কোচেই হাসপাতাল কাম এ্যাম্বুলেন্স করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি যদি সফল হয় তাহলে রেল অ্যাম্বুলেন্স করব আমরা।

তিনি আরও বলেন, এটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মতো, অসুস্থ হওয়ার পর দ্রুত চিকিৎসার জন্য যেভাবে রোগীকে পরিবহন করা হয়, ঠিক সেভাবেই রেল অ্যাম্বুলেন্স এ সেবা দেবে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মতো আমরাও ননস্টপ ট্রেনে করে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারব। কোচটিতে বেড থাকবে, আইসিইউ থাকবে, চিকিৎসক থাকবে। যে কেউ রেল এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে পারবেন। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে চট্টগ্রামে করতে যাচ্ছি আমরা। এরইমধ্যে স্কয়ার কাজ শুরু করেছে।

আরও পড়ুনঃ  করোনায় তরুণদেরও রেহাই নেই

রেলে বিশেষ ধরনের অ্যাম্বুলেন্সের নকশা তৈরি এবং কোচ মডিফিকেশনের কাজ স্কয়ার হাসপাতাল ও বাংলাদেশ রেলওয়ের যৌথ উদ্যোগে হচ্ছে। চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে রেলওয়ে কারখানায় এয়ারব্রেক সংবলিত কোচে কাজ শুরু করেছে স্কয়ার হাসপাতাল। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিগগিরই স্কয়ারের সঙ্গে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হবে রেলওয়ে।

এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেল যুক্ত হয় ১৮৬২ সালে। ১৮৬২ সালের ১৫ নবেম্বর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত  ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনের মাধ্যমে এ অঞ্চল রেলে যুক্ত হয়। বর্তমানে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ মিলিয়ে ২ হাজার ৯৫৫ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে।

রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, বিমান, সড়ক এমনকি নৌ পথেও এমন সুবিধা রয়েছে। কেবল রেলে ছিল না এবার আমরা এই ব্যবস্থা যোগ করছি। রেলের সেবাকে বহুমুখী করার অংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেভাবে কোন মুমূর্ষু রোগীকে সড়ক কিংবা এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে সেবা দেয়া হয় রেল সেভাবেই সেবা দেবে। প্রাথমিকভাবে একটা কোচে পরীক্ষামূলকভাবে করা হবে এবং সেটা চট্টগ্রামে করার পরিকল্পনা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন