শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিসি বদলি হওয়ায় অসন্তুষ্ট নেত্রকোণার নানান শ্রেণী পেশার মানুষ

ডিসি বদলি হওয়ায় অসন্তুষ্ট নেত্রকোণার নানান শ্রেণী পেশার মানুষ

নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি আব্দুর রহমানকে বদলি করায় অসন্তোষ প্রকাশ করছে জেলার নানান শ্রেণী পেশার মানুষজন । গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনের যে কয়েকটি জায়গায় রদবদল আনা হয়, তার মধ্যে নেত্রকোণাও রয়েছে । জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের উন্নয়ন কাজ, ব্যবসা বানিজ্য ও কৃষি ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত মানুষজনের সাথে কথা বলে তাদের এ অসন্তোষের কথা জানা যায়।

তারা বলেন কৃষির সাথে সম্পৃক্ত হাওর রক্ষা বাঁধ, জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা, জলমহাল ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে বর্তমান ডিসি কাজি আব্দুর রহমান সাহেব আসার পর থেকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা এসেছে, কিন্ত হঠাৎ করে তাঁর বদলি হওয়ায় এবং নতুন কেউ এসে এসব বিষয় বোঝে উঠতে উঠতে সেই জায়গাগুলোতে নানান অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা আবারো দানা বাঁধবে । বদরুল ইসলাম নামের জেলার সুশীল সমাজের একজন প্রতিনিধি বলেন, বদলি প্রশাসনের নিয়মিত একটি বিষয় হলেও একজন কর্মকর্তা যদি সৎ ও কর্মপরায়ণ হয় তাহলে তাঁকে সেই জায়গায় নূন্যতম একটা সময় রাখতে হয় যাতে করে তিনি একটা ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেন।

তিনি বলেন আমাদের জেলা প্রশাসক কাজি আব্দুর রহমান সাহেব অত্যন্ত সৎ ও কর্মপরায়ন এবং তিনি আসার পরে তাঁর অধীনস্থ জেলার সমস্ত অফিসগুলো ব্যাপক গতিশীল হয়। তিনি নিজেও রাত দিন পরিশ্রম করে সর্বত্র একটা ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে ভাটি অঞ্চল হওয়ায় এই জেলায় হাওর রক্ষা বাঁধ কৃষি ও কৃষকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজি আব্দুর রহমান সাহেব এসে এই বিষয়টায় জিরো টলারেন্স নীতি দেখিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  বাবুনগরী ও জিহাদীর নেতৃত্বেই হেফাজতের নতুন কমিটি

শামসুদ্দিন হায়দার নামে জেলার একজন সচেতন নাগরিক বলেন নেত্রকোণার সবচেয়ে বড় রাজস্ব উৎস হলো জেলার ছয়টি বালুমহাল। এই বালুমহালগুলোতে সারা বছর নানান অনিয়ম চলতে থাকে। বর্তমান ডিসি স্যার এসে বালুমহাল থেকে প্রায় শতকোটি টাকা রাজস্ব (যা ইতিহাসে প্রথম) আদায়সহ পুরো ব্যবস্থাপনায় একটা শৃঙ্খলা নিয়ে এসেছিলেন। এখন হুটহাট উনি চলে গেলে আরেকজন এসে এখানকার নানা মারপ্যাঁচ বুঝতে বুঝতে বছর চলে যাবে আর ক্ষতিগ্রস্থ হবে সরকার ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা।

স্যারের যেহেতু সময় আছে, তাই স্যারকে আরো যতদিন সম্ভব রাখা উচিত। তিনি বলেন জেলাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে সীমান্তে নানান অবৈধ ব্যবসার একটি অপচেষ্টা থাকে, যা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছিলো ক্রমান্বয়ে। বর্তমান ডিসি স্যার এসে বিজিবি, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সহযোগিতায় এ ব্যাপারেও জিলো টলারেন্স নীতি দেখিয়েছেন।

এমনিভাবে জেলার নানান শ্রেণী পেশার সচেতন মানুষ কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া এমন একজন সৎ, ন্যয় ও কর্মপরায়ণ ডিসির আকষ্মিক বদলিতে হতবাক হয়েছেন এবং তাদের দাবি জেলার নানান ইতিবাচক পরিবর্তন ও কাজের গতিশীলতার জন্য প্রজ্ঞাপন পরিবির্তন করে বর্তমান জেলা প্রশাসককে যেন তাঁর পূর্ণ মেয়াদে বহাল রাখা হয় ।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন