শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ টাকাতেও ক্রেতা নেই

১০ টাকাতেও ক্রেতা নেই
  • গোলা ঘরে পচছে আলু

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে ১০ টাকা কেজি দরে কেনাবেচা হচ্ছে আলু। বাড়িতে সংরক্ষণকৃত গোলাঘরে আলু পঁচে যাওয়ায় কমদামেই এসব আলু বিক্রি করতে বেপারীদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন চাষিরা। বেশিরভাগ গোলায় আলু পঁচে যাওয়ার পাশাপাশি আলুর রং কালচে হয়ে যাচ্ছে। আলুর পাইকারীবাজার বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে এসব মানহীন আলু নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন বেপারীরা। পঁচে যাওয়ার শঙ্কায় বাধ্য হয়েই অনেকেই বাকিতে গোলার আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন পাইকারদের কাছে। এ অঞ্চলে শতশত আলু চাষি লোকসানের দ্বায়ে দিশেহারা হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের বীরতারা, আটপাড়া, তন্তর, কুকুটিয়া, ষোলঘর এলাকায় চাষিরা আলুর কাঙ্খিত দাম পাননি। এ বছর আলু মৌসুমের শুরুর প্রথম থেকে এ পর্যন্ত নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে লোকসানের দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে ফলন সময় পার করছেন। সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায় আলুর মণ কেনাবেচা হচ্ছে। তবে সড়কের পাশে গোলার আলুর মান ভালো হলে পাইকারের কেরিং খরচ কম না থাকায় সর্বোচ্চ ৪৮০ টাকা দরে আলুর মণ কেনাবেচা হচ্ছে। এছাড়া পঁচা, রং কালচে ও সাইজে ছোট আলু কেনাবেচা হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। এসব মানহীন আলু কমদামে এলাকায় খামারিরা গো-খাবার হিসেবে কিনে নিচ্ছেন। স্থানীয় খুচরা হাটবাজারে খাবার আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা দরে।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। আলু চাষের শুরুতে অসময়ের টানা বৃষ্টির পানিতে রোপণকৃত প্রায় ৬০০ হেক্টর আলুর জমি প্লাবিত হয়। এতে শতশত আলু চাষির স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। লোকসানের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মধ্য মৌসুমে এসে পুনরায় অতিরিক্ত খরচে নিম্নমানের আলুবীজ বপন করেন। নিম্নমানের বীজ, বৈরী আবহাওয়া ও সঠিক সময়ের অভাবে এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিতেই আলুর আশানুরূপ ফলন হয়নি। এছাড়া আলুও পরিপক্ক হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  চাঁদ রাতে ঢাকায় সড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৪

স্থানীয় আলু চাষিরা জানায়, চলতি বছর একই জমিতে দুই বার করে তাদের আলুবীজ, সার, হালচাষ, শ্রমিক মজুরীসহ অন্যান্য খরচ শেষে জমিতেই উৎপাদিত প্রতিমণ আলু দাম পরেছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। বর্তমান বাজার দরে আলু বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা এচাষে প্রয়োজনীয় খরচের টাকা উঠবে না। বীরতারা এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর জানায়, ৩৫০ টাকা দরে গোলার আলু বিক্রি করছেন তিনি। গোলায় প্রায় ৩০ শতাংশ আলু পঁচে গেছে। দিন যতই যাচ্ছে আলুর পঁচন ততই বাড়ছে। বাধ্য হয়েই পাইকার ডেকে আলু মেপে দিচ্ছি। আটপাড়ার মো. রমজান জানান, এলাকা ভিত্তিক রাস্তার পাশে গৃহস্তের আলুর মান ভাল হলে দরদাম করছি। কুকুটিয়া এলাকার মো. নিজাম বেপারী জানান, মঙ্গলাবার পর্যন্ত এক কৃষকের আলু দাম করা হচ্ছে ৪০০ টাকা। পাইকারী বাজারে খব খরচ বাদে কেজিতে ১/২ টাকা লাভ হলেই বিক্রি করে দিচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন