রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপহারের ঘরে অভাব, কর্মসংস্থান নেই

উপহারের ঘরে অভাব, কর্মসংস্থান নেই

কক্সবাজারের টেকনাফে দু’দফায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন ৩শ’ পরিবার। ছিন্নমূল এসব পরিবারগুলো মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দে বিভোর। জীবনের প্রথম নিজস্ব ঘরে তারা ঈদ করতে পেরে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ভূমিহীন মানুষকে ঠাঁই দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মায়ের ভূমিকা পালন করছেন বলে জানান এসব অসহায় পরিবারগুলো।

তবে পিঠ রাখার জায়গা হলেও পেট ভর্তি ক্ষুধা নিয়ে দিন কাঁটছে তাদের। এসব পরিবারগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে একত্রিত হওয়ায় পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের সঙ্গে পরিচিতি না থাকায় কাজ-কর্ম পাচ্ছেন না। তাদের নেই কোনো কর্মসংস্থান। যার ফলে অনাহার-অর্ধাহারে তাদের দিন কাটছে বলে জানান প্রায় অর্ধশত পরিবার।

জানা যায়, উপজেলার হোয়াইক্যং মিনাবাজার এলাকায় মুজিববর্ষে ঘর পেয়েছেন ৭২ পরিবার। ৭২ পরিবারের মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ পরিবার একেবারে হতদরিদ্র। তাদের আয়-রোজগারের কোনো পথ নেই। কর্মসংস্থান না থাকায় কোনোমতে চলছে তাদের সংসার। সামনে বর্ষাকাল আসায় আরও চিন্তায় পড়ে গেছেন এ অসহায় পরিবারগুলো।

আরও জানাগেছে, উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা অধ্যূষিত এলাকা হওয়ায় প্রায় দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থা কাজ করছেন। তারা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতাও করে যাচ্ছেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া পরিবারগুলোর দিকে এসব এনজিওগুলো আপাতত নজর দিচ্ছে না। ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সহযোগিতাও তাদের জন্য আসছে না। তাই অতি কষ্টে চলছে তাদের সংসার জীবন।

এদিকে, ‎‎‎‎হ্নীলা ইউপির মৌলভী বাজার ২৮ পরিবারের একই অবস্থা বলে জানা গেছে। সেখানে গিয়ে এক বয়স্ক মহিলার সাথে কথা হয়। জীবনের শেষ বয়সে নিজ ঘরে ঈদ করতে পেরে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তিনিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় তিনি বলেন, রমজানে অনেক সময় ভালমতো সাহরি ও ইফতারি জুটেনি। ছিড়া, মুড়ি ও পানি খেয়ে কেটেছে রমজান মাস।

আরও পড়ুনঃ  চামড়ার অস্বাভাবিক দরপতনের তদন্ত চেয়ে রিট

তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করেন যে, রোহিঙ্গাদের মত আমাদেরকেও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা রেশন দিয়ে চালাচ্ছে। তবে আদৌ এনজিও বা অন্য কোনো সংস্থা তাদের দিকে নজর দেয়নি। সরকারি কোনো সংস্থার সহায়তা পেলে হয়তো আমাদের দূরাবস্থার কমে যাবে।

এছাড়াও উপজেলার হ্নীলা ইউপির হোয়াইংক্য টেকনাফ সদর, বাহারছড়া ও সাবরাং ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একই অবস্থায় কষ্টে দিনাতিপাত করছে মুজিববর্ষে ঠাঁই পাওয়া প্রায় পরিবারগুলো। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ওই পরিবারগুলো এ ব্যাপারে সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

এনিয়ে হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, এসব পরিবারগুলো আমাদের নজরে রয়েছে। কোনো বরাদ্ধ পেলে তারা আগে পাবে।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, তাদের ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সু-নজর আছে। পাশাপাশি তিনি এনজিওগুলোকেও এসব পরিবারের পাশে থাকার আহবান জানান।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন