শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘অশনি’র সাগরে ‘মরিয়া’ পর্যটকরা

‘অশনি’র সাগরে ‘মরিয়া’ পর্যটকরা
  • নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা সৈকতে লাফালাফি

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘুর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে কক্সবাজারে সাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে সাগরের পানি। অন্যদিনের তুলনায় সমুদ্র সৈকতে কমেছে মানুষের উপস্থিতি। তবে হাল্কা বৃষ্টি ও সতর্কতা সংকেত উপেক্ষা করে সাগরে নামছেন কিছু পর্যটক। তারপরেও কক্সবাজারে থাকা পর্যটকরা এখনও উদাসীন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেটি মানছেন না অনেকে। উত্তাল ঢেউয়ের মাঝেই তারা নেমে পড়ছেন সাগরে। লাইফগার্ডের কোনো নির্দেশনা মানছেন না। দুপুরে সৈকতে আরও দেখা গেছে বিরূপ আবহাওয়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার পর্যটক। অনেকে বলছেন, এমন আবহাওয়ায় সাগরে রূপা দেখতে তারা এসেছেন।

অস্বাভাবিক জোয়ারে বেড়েছে সাগরের উচ্চতা। কখনো মাঝারি কখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। মেঘে ঢাকা কক্সবাজারের আবহাওয়ায় এখন অনেকটাই গুমোট। আগের রাতে বৃষ্টি হলেও সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ায় প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। লাল পতাকা পুঁতে দেয়া হয়েছে সাগরের বিপদ রেখায়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। হুংকার করে তেড়ে আসা ঢেউয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন পর্যটকরা।

টিউবে চড়ে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন উত্তাল সাগর জলে। অথচ কক্সবাজারে সাগরে আসা পর্যটকরা জানেন, এখন সাগর উত্তাল, বৈরী আবহাওয়ার কথা। এর মধ্যে সমুদ্রে না নামতে সৈকত এলাকায় মাইকিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। লাইফ গার্ড কর্মীরাও সচেতন করছেন পর্যটকদের।

সৈকতে দায়িত্বরত সি-সেইফ লাইফ গার্ড জয়নাল আবেদীন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় তারা সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন। হাঁটু পানির গভীরে সাগরে না নামার জন্য হ্যান্ড মাইকে বারবার সতর্ক করা হলেও অনেক পর্যটক তা মানছেন না। এদিকে বৈরি আবহাওয়ায় সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ  ঘরোয়া চিকিৎসায় সুস্থ একই পরিবারের ৯ করোনা রোগী

কক্সবাজার জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, পর্যটকদের সাগরে নামতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। হোটেলগুলোতেও বলে দেওয়া হয়েছে তারা যেন পর্যটকদের এ বিষয়ে বুঝান। এছাড়াও সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও কক্সবাজারে এখনও প্রায় ৪০ হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। অনেক পর্যটক এরই মধ্যে কক্সবাজার ছাড়তে শুরু করেছেন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। ঘুর্ণিঝড় প্রবল হলে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে উপকূলের ৫ লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন