শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেনাকাটায় উপচেপড়া ভিড়

কেনাকাটায় উপচেপড়া ভিড়

দাম বেশি নেওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা

সকাল ৯টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত চলছে টানা কেনাকাটা। ঈদ আর রোজাকে সামনে রেখে চলছে এ পণ্য বিক্রি। শপিং মলগুলোতে ভিড় বেশি। তাই যাচাই-বাছাই করার সুযোগ কম। পণ্যের গায়ে যে মূল্যলেখা আছে সে মূল্যেই ক্রয় করতে হবে। নচেৎ অন্য ক্রেতাকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। এমন অভিযোগ অনেক ক্রেতার। নাটোরের গুরুদাসপুরের মার্কেটগুলোতে চলছে এমন অরাজকতা।

সরেজমিনে বাণিজ্য নগরী চাঁচকৈড় বাজারে প্রবেশে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতাদের ভিড়ে দোকানের ভেতরে প্রবেশের উপায় নেই। ছোট-বড়, বৃদ্ধ-যুবক ও শিশুসহ সবাই এসেছেন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে। দেখে বোঝার উপায় নেই এটা হাট না বাজার। গুরুদাসপুর-চাঁচকৈড়ে গার্মেন্টস, জুতা ও কসমেটিক্সসহ দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে মার্কেটগুলোতে  প্রতিনিয়তই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। প্রত্যাশা অনুযায়ী ক্রেতা পাওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরাও। বেচা বিক্রিও বেড়ে গেছে অনেকগুণ। একটানা শেষ রমজান পর্যন্ত চলবে ঈদের এ কেনাকাটা। অথচ মোকামে ঈদ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কথা বলে দোকানীরা চড়া দামে পণ্য বিক্রি করছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ রয়েছে।

 বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানায়, ক্রেতার সংখ্যা বেশি থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম হাঁকাচ্ছেন। বেশিরভাগ দোকানেই নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে গার্মেন্টসপণ্য (জামাকাপড়) বেশী দামে বিক্রি করা হচ্ছে। শুধুমাত্র হকারস মার্কেটগুলোতে কিছুটা স্বল্পমূল্যে খেটে খাওয়া মানুষগুলো ঈদ কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।

কামরুন্নাহার শাপলা এবং রিতা মনি নামের দু’জন ক্রেতা জানান, ঈদ মানে আনন্দ। ছোট বেলায় ঈদে পোশাক নিতে পছন্দ করতাম আর এখন দিতে ভালো লাগে। নিজেদের কথা বাদই দিলাম, শিশু এবং গরিব দুস্থ্যদের জন্য কেনাকাটা তো করতেই হবে। এজন্য মার্কেটে এসেছি। সেই সঙ্গে পরিবারের লোকজনের জন্য কিছু কিনতে এসেছি।

আরও পড়ুনঃ  ভারতে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ

সজিব হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন, অফিস বন্ধ থাকায় বাজারে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিলাম। মার্কেটে এসে দেখলাম অবস্থা ভয়াবহ। এতো মানুষ, সবাই কেনাকাটায় ব্যস্ত। মার্কেটে যখন আসছি তখন কেনাকাটা তো করতেই হবে। এখন পর্যন্ত একটি শাড়ি আর দুটি থ্রি-পিস কিনেছি। অন্যান্য সময়ের তুলনায় দাম অনেক বেশি। দাম বেশি হলেও কিনতে হচ্ছে। গার্মেন্টস, জুতা ও কসমেটিকের দোকাননহ সব দোকানের অবস্থা একই রকম।

সাফা গার্মেমেন্টসের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবছর একটু ক্রেতার ড়ির বেশি। বেচাকেনা অন্য সময়ের চেয়ে ঈদ পূজায় একটু বেশিই হয়। গত বছর লকডাউনের কারণে সময়ও কম পেয়েছি তাই প্রত্যাশা অনুযায়ী বেচাকেনা করতে পারিনি। তবে সে তুলনায় এবার একটু বেচাকেনা বেশি হচ্ছে।

স্বপ্না ও মাইব্যান্ড এর মালিক রফিক ও রকি জানান, ক্রেতাদের অভিযোগ ঠিক না কারন এবার মোকামেই গার্মেন্টস পণ্যেও দাম বেশি।

গত বছর যে টাকায় দুই বেল্ট মাল কেনা যেত এবছর সমপরিমাণ টাকায় এক বেল্ট মালই কেনা যাচ্ছে না। এ কারনে হয়তো দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবে এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশুদের স্কার্ট, ফ্রগ, লেহেঙ্গা আর বড়দের গ্রাউন্ড, থ্রিপিচ, ফোর পিচ ও পুরুষদের জন্য ইন্ডিয়ান জামদানী পাঞ্জাবী ও জিন্সের প্যান্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে।

বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিথী বস্ত্রালয়ের সত্ত্বাধিকারী হাজী বরকত আলী জানান, চলতি বছর একটু বেশি ক্রেতার ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত দুই বছর বেচাবিক্রিই করতে পারিনি। তবে চলতি বছর ঈদের আগ পর্যন্ত এ রকম বেচাবিক্রি হলে গত বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  ১১১ তলা ভবন নির্মিত হচ্ছে ঢাকায়

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন জানান, দোকান মলিকরা কোনো অনিয়ম করলে ভোক্তাধিকার আইনে মাঝে মধ্যেই অভিযান পরিচালনা করে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। এধরনের অভিযান চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান। বেশি দাম নেবার কোন সুযোগ নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন