পাম নদী তীরের শত শত বাড়ি-কোটি টাকার সেতু হুমকিতে
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বনগ্রাম বেংহারী ইউনিয়ন পরিষদের পাম নদীর ব্রিজের কাছ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন একটি প্রভাবশালী চক্র বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। নদীতে বাধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে পুকুর নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাম ব্রিজটি ঝুঁকিতে রয়েছে। অপরদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বোদা উপজেলার পাম্প নদীর ব্রিজের নিচে প্রায় ২৫টি মাহিন্দ্র গাড়িতে করে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পাশে থাকা বসতবাড়ি আর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়েছেন।
সরকারি লিজে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এমন মিথ্যা তথ্যে দিনের পর দিন বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে তাদের দেওয়া হচ্ছে হুমকি। বালু উত্তোলনের সরকারি নিয়ম থাকলেও সেটিকে কোন তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না। বরং ইজারা না নিয়েই চলছে এ হরিলুট। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জিয়াউর রহমান নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে চলছে অবৈধভাবে পাম নদী থেকে বালু উত্তোলন। ওই চক্রটি বরাবরই রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বরং বালু দস্যুরা বেপরোয়া ভাবে তাদের বালু উত্তোলনের কাজ চালিয়ে আসছে। যে কারনে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীর পাড়ের অনেক মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, গাছপালা, জায়গা জমি হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হওয়ার হুমকিতে দিন কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনের কারনে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাম ব্রিজ আজ হুমকির মুখে পড়েছে। তাই আমরা অতিদ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট লিখত আকারে অভিযোগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পুকুর নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।
এবিষয়ে পঞ্চগড় বোদা উপজেলা বনগ্রাম বেংহারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি পঞ্চগড় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং পঞ্চগড় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে বিষয়টি জানিয়েছি।
আনন্দবাজার/শহক