- ভরা মৌসুমে সুন্দরবনে মধু সংকট
- খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন মৌয়াল
জলবায়ু পরিবর্তনসহ অনাবৃষ্টির কারণে বৃক্ষে সময়মত ফুল না আসায় ভরা মৌসুমে মধু সংগ্রহ করতে না পেরে এ সপ্তাহে প্রায় দুই শত মৌয়াল বাড়ি ফিরে এসেছেন। সুন্দরবনে মৌয়ালরা মধুর চাক পাচ্ছেন না। তবে, দু’একটি চাক পাওয়া গেলেও মধুর পরিমান খুবই কম। মহাজনদের কাছ থেকে নেয়া অগ্রিম (দাদন) টাকা পরিশোধ করা নিয়ে মৌয়ালরা এবার বেশ চিন্তিত। তাদের ধারণা সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরা ও সময়মত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে মৌমাছির বাসা কমে গেছে।
পূর্ব সুন্দরবন বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর মধু আহরণের জন্য বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ৪১টি পাশ (অনুমতিপত্র) ইস্যু করা হয়। যার অনুকূলে প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌয়াল ১৫ দিনের পাশ নিয়ে গত ১ এপ্রিল সুন্দরবনে প্রবেশ করে। অনেক কষ্টে মৌচাকের সন্ধান পাওয়া গেলেও আশানুরুপ মধু পাচ্ছেন না মৌয়ালরা। কাঙ্খিত মধু না পেয়ে মৌয়ালরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। এছাড়া গত ৩-৪ দিনে ১৮টি পাশ মৌয়ালরা শরণখোলা স্টেশন অফিসে জমা দিয়ে প্রায় দুই শত মৌয়াল নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।
সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী, বগী ও তেরাবাকা গ্রামের একাধিক মৌয়াল জানান, মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নিয়ে মধু সংগ্রহে গিয়ে মধু না পেয়ে ফেরত আসতে হয়েছে। কীভাবে মহাজনের টাকা পরিশোধ করব, সেই চিন্তায় আছি। তারা আরো জানান, ১১ দিন বনে ঘুরে ১২ জনের একটি দল ৩০ কেজি ও অন্য আরেকটি দল ১০ দিনে ১৫টি চাক থেকে ১০ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পেরেছে। এতে তাদের খোরাকির টাকাও উঠে আসবেনা বলে জানান তারা।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও স্টেশন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, অব্যাহত খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে সময়মত গাছে ফুল না ফোটায় এ বছর সুন্দরবনে মৌমাছি আগের মতো বাসা বাঁধেনি। তাই বনে মধু সংকট দেখা দিয়েছে বলে ধারনা করছেন।