বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুকুর-জলাশয়ে রাক্ষুসে সাকার ফিশ

পুকুর-জলাশয়ে রাক্ষুসে সাকার ফিশ

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এক পুকুরেই ধরা পড়েছে এক এক করে ২৫টি সাকার ফিশ। ছোট একটি পুকুরে এক সঙ্গে এতগুলো সাকার ফিস ধরা পড়ায় উপস্থিত অনেকেই অবাক হন। গত ১২ এপ্রিল পুকুরে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পূর্ব-চরবলেশ^র গ্রামের সাংবাদিক জে আই লাভলুর বাড়ির পিছনের একটি ছোট পুকুরে ২৫টি সাকার মাছ ধরা পড়ে। এর আগেও একই পুকুরে জাল ফেলে বেশ কটি সাকার ফিশ ধরা পড়ে। এভাবেই এ উপজেলার বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ে অহরহ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে এ রাক্ষুসে মাছটি।

জানা যায়, সাকার ফিশ অথবা সাকার মাউথ যে নামেই ডাকা হোক না কেন এটি ছিল এক ধরনের শোভাবর্ধণকারী অ্যাকুরিয়ামের মাছ। তবে বর্তমানে এ মাছ অ্যাকুরিয়ামের বাইরেও পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে। আর তাই আশঙ্কা বেড়েছে মৎস্য চাষিদের মধ্যে। গ্রামাঞ্চলের অনেকের কাছেই এ মাছ একদম নতুন ধরনের একটি প্রজাতি। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় এ মাছ গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে। নাম না জানা অনেকেই এটিকে বিরল প্রজাতির মাছ বলে থাকেন। তবে এটা বিরল নয়। দক্ষিণ আমেরিকাতে এ ফিশ সহজলভ্য।

সাকার ফিশ মূলত জলাশয়ের আগাছা, জলজ পোকামাকড় ও ছোট মাছ খেয়ে থাকে। তবে এটি শিকারি প্রজাতির নয়। মুখ দিয়ে শুষে খাবার খায়।

স্থানীয় মৎস্যজীবী, বাসিন্দা ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নদী সংলগ্ন খাল-বিল এবং আশেপাশের পুকুরে গত কয়েক বছর ধরে সাকার ফিশের দেখা মিলছে। স্থানীয়রা এ মাছকে চেনে ‘টাইগার ফিশ’ নামে।

আরও পড়ুনঃ  দেশের অর্থনীতির চাকা সচলে মেগাপ্রকল্পই এখন বড় ভরসা

সাকার মাউথ মাছ যে হারে উপকূলীয় এলাকায় ধরা পড়ছে তাতে বাংলাদেশের জন্যও আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত এ মাছের বংশ বৃদ্ধি রোধ না করতে পারলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উপকূলীয় এলাকার মৎস্যচাষিরা।

সাংবাদিক জে আই লাভলু জানান, সাকার ফিশ ইদানিং প্রায়ই আমাদের এলাকায় দেখা যাচ্ছে। আগে এতোটা দেখা যেত না। পুকুরে এ মাছ থাকার কারনে চাষকৃত অন্য মাছের জন্য সমস্যা হচ্ছে। অন্যান্য ছোট মাছ খেয়ে ফেলছে। পুকুরে এক সঙ্গে এত গুলো সাকার ফিস ধরা পড়ায় বিস্মিত তিনি।

ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরদার জুলফিকার আলীর বলেন, সাকার মাউথ মাছ আমাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা এখনো জানা যায়নি। তবে এ মাছ নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণা চলছে। এ মাছ খাওয়ার যোগ্য না। তবে খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করতে পারে। আবার সহজে মরেও না। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এ মাছ আ্যাকুরিয়ামের শোভাবর্ধনের জন্যই আনা হয়েছিল। তবে তা এখন আর অ্যাকুরিয়ামে সীমাবদ্ধ নেই। প্রায়ই দেখা মিলছে জেলেদের জালে। এ মাছ অন্যান্য ছোট মাছ গুলোকে খেয়ে ফেলছে। এটা বেশ কয়েকবছর আগে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধারনা এ মৎস্য কর্মকর্তার।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন