শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ-সড়কে চরের জীবন বদল

বিদ্যুৎ-সড়কে চরের জীবন বদল

জামাপুরের ইসলামপুরে যমুনার দূর্গম চরাঞ্চলে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে। যুগ যুগ ধরে চরাঞ্চলের মানুষ ছিলো অবহেলিত। আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলো তারা। যেখানে কেরোসিনের কুপিবাতি, হ্যারিকেন, কিংবা মোমবাতি ছিল একমাত্র তাদের ভরসা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই নেমে আসতো ঘুটঘুটে অন্ধকার। এখন সেখানে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠছে। রাস্তাঘাট পাকাকরণ, ব্রিজ কালভাট নির্মাণ করায় পাল্টে যাচ্ছে চরাঞ্চলের হাট বাজারে চিত্র। আলোর রশ্মি ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গম চরবাসির প্রতিটি ঘরে ঘরে। গড়ে উঠছে ছোট ছোটো ক্ষুদ্রশিল্প।

স্থানীয়রা জানায়, যমুনার দূর্গম চর সাপধরী একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করতে সর্বমোট প্রায় ৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্যে নতুন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ ও চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু। এ ছাড়া প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাঘাট, পাকা করণসহ ব্রিজ কালভার্ট, বাজারের সেট ঘর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। প্রতিটি বাড়ি-ঘরে এখন বৈদ্যুতিক বাতির আলোর ঝলকানিতে আলোকিত হয়েছে।

এ বিষয়ে কাজলা গ্রামের বাসিন্দা হায়তুল্ল্যা মিয়া, রইচ উদ্দিন, চরচেঙ্গানীয়ার সুলতান মিয়া, সোবাহান আলী, চর শিশুয়ার সুরুজ মিয়াসহ স্থানীয় জানায়, আগে কোনোদিন আমরা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি, আমাদের এ দূর্গম চরাঞ্চলের মানুষ রাস্তাঘাট পাকাকরণ ব্রিজ, কালভার্ট, বাঁধ নির্মাণ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহুতল ভবন করাসহ হট-বাজারে সেড নির্মাণ হবে। বর্তমান সরকারের এ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে চরবাসির জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হাজার গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা অত্যান্ত খুশি।

আরও পড়ুনঃ  প্রকৃতির বৈরিতায় দুশ্চিন্তায় আমন চাষিরা

এ বিষয়ে সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, জয়নাল আবেদীন(বিএসসি) জানান, বহুকাল ধরেই চরাঞ্চলে মানুষ তীব্র নদীভাঙন, বন্যা কবলিত, খরাসহ একের পর এক বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বসবাস করতে  হয়েছে। চরের মানুষ অত্যন্ত অবহেলিত ছিল। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরিবর্তে দূর্গম চরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে স্বপ্নের সাপধরী গড়তে স্থানীয় সংসদ সদস্য বর্তমানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান দুলাল মহোদয়ের মাধ্যমে নানামুখি উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় চরাঞ্চলের মনুষ এখন আর আগের মত নেই। কারণ এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান দুলাল এমপির দিকনির্দেশনায় এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামাল আব্দুন নাসের বাবুলের সার্বিক সহযোগিতায় বিভিন্ন রাস্তাঘাট পাকাকরণসহ ব্রিজকাল ভার্ট নির্মাণের ফলে অতি সহজেই যাতায়াত কৃষিপণ্য পরিবহন, বাজার জাত করণ করাসহ স্কুল কলেজে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা জন্য সুফলতা পাবে। তাই আমরা চরবাসি  বর্তমান সরকারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। এখন আমাদের দাবী একটাই, ৭১ এর মহান মুক্তিযোদ্ধের সময় সাপধরী ইউনিয়নে কটাপুর বাজারে মুক্তিযোদ্ধাদের অভয়য়ারণ্য অবাধ বিচরণ ছিল বলে বাজারটির নাম করণ করা হয় মুক্তির বাজার। আশির দশকের পরবর্তি বাজারটি যমুনার করালগ্রাসে বিলিন হয়ে যায়। ২০০৫ সালের পরবর্তি কটাপুর এলাকায় বিশাল চর জেগে উঠে। তাই ৭১ এর ঐতিহাসিক নাম মুক্তির বাজার রক্ষায় জেগে উঠা চরে একটি আধুনিক ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণসহ বন্যাকবলিত মানুষের জন্য একটি মুজিব কেল্লা নির্মাণের অনুরোধ জানিয়েছেন। 

এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান দুলাল এমপির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুয়োগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার, গ্রাম হবে শহর। তাই তার স্বদিছায় ইসলামপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের যমুনার দ্বীপচরগুলোর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে। তাই তার কাছে ইসলামপুর বাসির পক্ষ থেকে চিরকৃতজ্ঞ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন