শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের চাল যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়

ভারতের চাল যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়

৯৫ শতাংশ স্বাক্ষরতার উদার দেশের বেহাল দশা

গৃহযুদ্ধের সমাপ্তির পর বিশ্বের কাছে একুশ শতকের সফল অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। কয়েক বছর আগেও দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর অর্থনীতির দেশ ছিল শ্রীলঙ্কা। যেখানে মাথাপিছু জিডিপি চার হাজার ডলারের বেশি। ৯৫ শতাংশ স্বাক্ষরতার হার নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উদার দেশটি। তাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থাও দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। তবে এখন সামনে শুধুই অন্ধকার দেশটির সামনে। চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ থেকেও হাত পেতেছে দেশটি। সর্বশেষ খাদ্য সংকট মেটাতে হিমশিম খেয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি দেশটিতে।

এমতাবস্থায় ভারত থেকে ক্রেডিট লাইন সুরক্ষিত করার পর ভারতীয় ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে প্রধান খাদ্যপণ্যের মধ্যে ৪০ হাজার টন চাল পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে এ তথ্য।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট, গ্যাস ও পানির তীব্র সংকট, খাদ্য সংকট, প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বী দামসহ নানা সমস্যার বেড়াজালে আটকা পড়েছে শ্রীলঙ্কার মানুষ। গত বছরের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য ঘাটতি দ্বিগুণ হয়ে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এদিকে, বিদেশি ধার-দেনা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ভারত বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ। গত মাসে দেশটি শ্রীলঙ্কাকে ১ বিলিয়ন ডলার ক্রেডিট লাইন সহায়তা দিতে সম্মত হয়। যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধ সংক্রান্ত পণ্য সরবরাহ করার কথা। ভারত চাল পাঠানোর কারণে কলম্বোতে কিছুটা হলেও চালের বাজারে দর কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে যেটি গত একবছরে দ্বিগুণ হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  গৃহবন্দি সুদানের প্রধানমন্ত্রী

ইন্ডিয়ান ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি এগ্রিমেন্টের আওতায় শ্রীলঙ্কায় খাদ্যপণ্য সরবরাহ করছে পট্টভী এগ্রো ফুডস। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের বন্দরে চাল লোডিং শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, শিপমেন্টের জন্য প্রথমে কন্টেইনার লোড করছি এবং কিছু দিনের মধ্যে জাহাজ লোডিং শুরু হবে।

এদিকে, তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়া শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। শুক্রবার দিনগত মধ্যরাতে দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারির এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে দেশটিতে অর্থনীতি ধসে পড়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার রাতে কলম্বোর মিরিহানায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকশ মানুষ। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের।

টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন। বিক্ষোভের ঘটনায় ৪৫ জনকে আটক করা হয়। রাতেই কলম্বো উত্তর, দক্ষিণ, কলম্বো সেন্ট্রাল, নুগেগোদা, মাউন্ট লাভিনিয়া এবং কেলানিয়ায় কারফিউ জারি করা হয়। পরে শহরগুলো থেকে কারফিউ তুলে নেয় কলম্বো সরকার।

সংবাদটি শেয়ার করুন