মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত বাংলাদেশ

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্ত বাংলাদেশ
  • আমাদের বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেওয়ার জন্য বিচারপতিদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিম্নআদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। উচ্চ আদালত রায় দিয়ে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত করে দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ১২তলা ভবনের (বিজয়-৭১) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যারা আপনজন হারিয়েছিলাম, আমাদের কোনো অধিকার ছিল না বিচার চাওয়ার। এমনকি আমি বাংলাদেশে ফিরে এসে মামলা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মামলা করতে দেওয়া হয়নি। কারণ দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে খুনিদের।

বিচারহীনতার একটি সংস্কৃতি বাংলাদেশে চালু করা হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই অবস্থার পরিবর্তন করতে পেরেছি যখন একমাত্র জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকারে এসেছি তখন। সেখানে অনেক বাধা অনেক কিছুই আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু আমি ধন্যবাদ জানাই বিচারকের সাহসী পদক্ষেপের জন্য।

বিচার বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আইন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পদক্ষেপ আমরা নেব। এ বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ নিতে হবে। কারিকুলাম কি হবে, সেটি ঠিক করতে হবে। এসময় আইন ও বিচার বিভাগে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি দেশের উচ্চ আদালতই নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে। আমাদের সুপ্রিম কোর্টও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকরা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন সততা, মেধা ও শ্রম দিয়ে মামলার জট কমিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত বিচার প্রার্থীদের যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচার দিয়ে বাড়ি ফেরাতে। আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থী মানুষের দুর্দশার সুযোগ নেওয়াকে বরদাশত করা হবে না।

আরও পড়ুনঃ  বেড়িবাঁধে ভাঙন আতঙ্ক, কৃষিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এছাড়া স্বাগত বক্তৃতা করেন আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার। এসময় সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স এক্সটেনশন (বর্ধিত) ভবন নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৫৮ কোটি চার লাখ ২২ হাজার টাকা। যার পুরোটাই বহন করছে সরকার। এনেক্স ভবনের পশ্চিম পাশে ১৮ হাজার ১৩৪ বর্গমিটার জায়গায় নির্মিত হলো এ ভবন। এতে রয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, বিচারপতিদের জন্য ৫৬টি চেম্বার, ৩২টি এজলাসকক্ষ (কোর্ট রুম), আলাদা দুটি লিফট, আধুনিক জেনারেটর ও দোতলা বিদ্যুতের সাব-স্টেশন। এছাড়া এ ভবনে ৩২টি ডিভিশন বেঞ্চ ও বিচারপতিদের চেম্বার ছাড়াও ২০টি অফিসকক্ষ এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দাপ্তরিক কক্ষ রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন