শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সয়াবিনের চাপ কমাবে সরিষা

সয়াবিনের চাপ কমাবে সরিষা
  • ধানের চেয়ে সরিষায় লাভ বেশী

বর্তমান বাজারে সয়াবিনের অস্থিতিশীল বাজার মূল্যের কারণে সয়াবিনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে সরিষার সেই পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিশেষভাবে সরিষা চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে : ড. ছাইদুর রহমান, উপপরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নরসিংদী

নরসিংদীতে প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষার আবাদ। অল্প খরচে বেশী লাভজনক হওয়ায় সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তবে এবছর সরিষা চষের শুরুতে বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতের কারণে সরিষা চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় লাভের পরিমান কম হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, সরিষা চাষে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫হাজার ৫৩ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৪৭ হেক্টর বেশী। জেলার ৬টি উপজেলায় বারি-১৪, বীণা-৯ ও বারি-১৭ জাতের সরিষা চাষ কৃষকরা। তবে কম সময়ে বেশী ফলন ও লাভজনক হওয়ায় বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে বেশী। তাছাড়া বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষেই কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এবছর বিঘা প্রতি সরিষা চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি সরিষার উৎপাদন ৫ মণ হলে বিক্রি হবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। ধানের চেয়ে কম সময়, কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশী লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষার আবাদ। তবে এবছর সরিষা চষের শুরুতে বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লাভের পরিমান কম হবে বলে মনে করছেন কৃষক।

আরও পড়ুনঃ  প্রধানমন্ত্রীর ১০ উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা

রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জের কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম আনন্দবাজারকে বলেন, সরিষা চাষের শুরুতে দুইবার চাষ দিয়ে ও বিভিন্ন ধরণের সার প্রয়োগ করে জমিটিকে উর্বর করে নিতে হয়। পরে সরিষার বীজ ফেলার পর তেমন আর যত্ন নিতে হয় না। এরপর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং ফলন ভালো হলে লাভও ভালো হবে। সরিষা চাষ ধান চাষের চাইতেও লাভ বেশী। তবে এবছর সরিষা চাষের শুরুতে বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতের কারণে সরিষা চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার লাভের পরিমান কম হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর সরিষার বাজারদর ভাল আছে। তাই কিছুটা লাভের দেখা পাওয়া যাবে।

কৃষক আব্দুল হাকিম আনন্দবাজারকে বলেন, আমণ ও বোরো ধানের মধ্যবর্তী সময়ে সরিষা চাষে একদিকে যেমন লাভবান হচ্ছি অন্যদিকে সরিষার পাতা পঁেচ জৈব সার হিসেবে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করছে এই সরিষা চাষ। এতে পরবর্তীতে ধান চাষে খরচ অনেকটা কম হবে। এছাড়া সরিষা চাষের পাশাপাশি সরিষা শাক ও সরিষা ফুল বিক্রি করেও অতিরিক্ত উপার্জন করা সম্ভব।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. ছাইদুর রহমান আনন্দবাজারকে বলেন, বর্তমান বাজারে সয়াবিনের অস্থিতিশীল বাজার মূল্যের কারণে সয়াবিনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে সরিষার সেই পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিশেষভাবে সরিষা চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া এবছর সরিষার আবাদ বাড়াতে জেলার ৩হাজার কৃষককে কৃষি প্রণোদনার আওতায় এনে সরিষার বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। আগামীতেও সরিষা চাষ আরো বৃদ্ধি করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন