বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভিযোগের ১৬ দিনের মাথায় চাকরিচ্যুত দুদকের শরীফ

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া এবং ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্তিসহ অনিময়ের বিভিন্ন ঘটনায় তদন্ত করে আলোচনায় আসেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। ‘হত্যা ও চাকরি খাওয়ার হুমকি’র অভিযোগ এনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
  • হত্যা ও চাকরি খাওয়ার হুমকি
  • রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তদন্তে পরিচিতি লাভ

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া এবং ভোটার তালিকায় অন্তুর্ভুক্তিসহ অনিময়ের বিভিন্ন ঘটনায় তদন্ত করে আলোচনায় আসেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। ‘হত্যা ও চাকরি খাওয়ার হুমকি’র অভিযোগ এনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

‘হত্যা ও চাকরি খাওয়ার হুমকি’ পাওয়ার কথা জানিয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন শরীফ। তার ষোল দিনের মাথায় গত বুধবার দুদক কার্যালয় থেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
বলা হয়, প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে তার অপসারণের আদেশ কার্যকর হবে এবং বিধি অনুযায়ী তিনি ৯০ দিনের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন।

কোনো ধরনের ‘কারণ দর্শাও নোটিস না দিয়ে’ এভাবে অপসারণের বিষয়টিকে ‘অসাংবিধানিক’ হিসেবে বর্ণনা করে শরীফ বলেন, তিনি ‘প্রভাবশালী মহলের’ রোষানলের শিকার। সাত বছরের চাকরি জীবনের সাড়ে তিন বছর চট্টগ্রামে কাজ করেছি। এ সময় ভুলভ্রান্তি হতে পারে, কিন্তু চাকরি যাবার মত কোনো কাজ আমি করিনি।

শরীফকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি নিয়ে তার সহকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনও করেছেন একদল কর্মী।
তবে দুদক চেয়ারম্যান মো. মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহ বলছেন, শরীফ উদ্দিন এমন কিছু করেছিলেন, যাতে ওই সিদ্ধান্ত নিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, সে যে কাজ-কারবার করেছে, তাতে তাকে নোটিস দিয়ে অপসারণ করার প্রয়োজন নেই। সে এমন অনিয়ম করেছে, তাকে সরাসরিই অপসারণ করতে হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  অপরাধটা কী আওয়ামী লীগের?

তবে ঠিক কী অনিয়ম শরীফ করেছেন, অথবা কী কী অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে, সেসব বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি দুদক চেয়ারম্যান।

২০০৮ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুযায়ী কোনো কারণ না দর্শিয়ে কোনো কর্মচারীকে ৯০ দিনের নোটিস দিয়ে অথবা ৯০ দিনের বেতন পরিশোধ করে চাকরি থেকে অপসারণ করার সুযোগ আছে।

গত বছরের জুন মাসে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক, সেসব মামলার বাদী ছিলেন শরীফ।
পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেও তিনি আলোচিত হন।
অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও তদন্ত করেন শরীফ।

পরে অভিযোগের ‘সত্যতা পেয়ে’ কেজিডিসিএল এর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সাবেক বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজনকে আসামি করে গত বছরের ১০ জুন মামলা করেন তিনি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন