শজনেগাছের ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এবং এর পাতাও খাওয়া হয় নানা উপায়ে। এবার বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) বিজ্ঞানীরা এই শজনেপাতার পুষ্টিকর গুঁড়া তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।
পুষ্টিবিদেরা জানান, শজনেপাতার গুঁড়া পুষ্টির আধার। এতে আছে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, জিংকসহ অসংখ্য উপকারী উপাদান। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ডায়বেটিস, হৃদ্রোগ নিয়ন্ত্রণে এবং কিডনি, যকৃৎ ভালো রাখতে সহায়ক।
গবেষণাটি করেছেন, বিসিএসআইআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজাউল করিম, জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রকিবুল হাসান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দেবব্রত কর্মকার।
প্রোটিনের খুব ভালো উৎস এই শজনেপাতা। বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা জানান, তাদের পদ্ধতিতে উৎপাদিত শজনেপাতার গুঁড়াতে ২৭ শতাংশ প্রোটিন, ৩৮ শতাংশ শর্করা, ১৯ শতাংশ ফাইবারের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া ২ শতাংশ চর্বি, ৯ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন (প্রতি ১০০ গ্রামে ৫০ হাজার ২৬৯ মাইক্রোগ্রাম) পাওয়া যায়। বিটা ক্যারোটিন হচ্ছে একধরনের রঞ্জক পদার্থ, যেটি শাকসবজিতে উপস্থিত থেকে লাল, হলুদ ও কমলা রং দেয়। যা মানবদেহে রেটিনলে (ভিটামিন এ) রূপান্তরিত করে।
দৈনন্দিন ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয় দৈনিক এক চামচ শজনেপাতার গুঁড়া খেলে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শজনের প্রতি ১০০ গ্রামের কাঁচা পাতায় প্রোটিনের পরিমাণ থাকে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এবং একই পরিমাণ শুকনা পাতার গুঁড়াতে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে হয় ২৭ দশমিক ১ শতাংশ। আবার প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা শজনেপাতায় কার্বোহাইড্রেট থাকে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। যা তিন গুণ বাড়ে এবং ফাইবার থাকে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ, যা বাড়ে ২১ গুণ।
শজনেপাতার গুড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। পুষ্টির পরিমাণ কাছাকাছি থাকায় কেউ প্রতিদিন দুধ খেতে না পারলে এক চামচ শজনেপাতার গুঁড়া খেতে পারেন।
আনন্দবাজার/ টি এস পি