শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ

সরকারের ব্যাংক নির্ভরশীলতা নিয়ে বেশ আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছে। দিন দিন এ নির্ভরতা বেড়েই চলেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ ২ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বেড়ে ১২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তবে এ সময়ে উন্নয়ন ব্যয় সেভাবে বাড়েনি। ফলে এই অর্থের বেশিরভাগই সরকার স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে ব্যয় করছে।

২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ট্রেজারি বিল ও বন্ড নিলামের মাধ্যমে নিট ২৭ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।

এই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করায় নিট ঋণ ১৪ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা কমেছে। ফলে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়ায় ১২ হাজার ৬৮১ কোটি ২ লাখ টাকা।

এর আগে ২০২০-২১ এ জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ১০ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা।

গত বছরের ৩০ জুন সরকারের নিট ব্যাংক ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ২ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। একই সময়ে সঞ্চয়পত্র ছাড়া ব্যাংক বহির্ভূত অন্যান্য উৎস থেকে সরকার আরও ২ হাজার ৩৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। ফলে সঞ্চয়পত্র ছাড়া অভ্যান্তরীণ উৎস থেকে আলোচিত সাত মাসে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৩১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

আরও পড়ুনঃ  ১৩ লাখ বিঘা জমির ফসল কেরে নিল বন্যা

সঞ্চয়পত্রের ঋণের জানুয়ারি মাসের তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ এসেছে ৯ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা।

সরকারে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাস ভিত্তিক এডিপি বাস্তবায়নের চিত্র থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থ বছরের জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে সরকার ব্যয় করেছে ৪৪ হাজার ৬১ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৮ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শতাংশ হিসেবে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ।

এদিকে গত ২০২০-২১ অর্থবছরের কোভিডের প্রভাবে সারাদেশে লকডাউন চলে। ফলে উন্নয়ন কাজের ব্যয় একাবারেই ধীরগতিতে চলছিল। এ কারণে সেই অর্থবছরে সরকার ব্যাংক ঋণ নিয়েছে মাত্র ২৬ হাজার কোটি টাকা। যদিও আগের অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণ ছিল ৭২ হাজার কোটি টাকার বেশি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন