শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন প্ল্যাটফর্মে ক্ষুদ্র ঋণ

নতুন প্ল্যাটফর্মে ক্ষুদ্র ঋণ

পরীক্ষামূলকভাবে নতুন একটি প্ল্যাটফর্মের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের (এমএসএমই) উদ্যোক্তাদের ঋণের চাহিদা মেটাতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঋণের চাহিদা দেবে পণ্য উৎপাদন বা সরবরাহকারীরা। আর পণ্য কেনার নিশ্চয়তা সনদ দেবে ক্রেতা। ক্রেতার নিশ্চয়তা পাওয়ার পর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার বিপরীতে পণ্য সরবরাহকারীকে অর্থায়ন করবে। পরে ক্রেতা পণ্যে বিল শোধ করলে তার সঙ্গে ঋণ সমন্বয় করবে ব্যাংক। ফলে সহজেই ঋণসুবিধা পাবে পণ্য উৎপাদনকারীরা।

এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘থিংক বিগ সলিউশন লিমিটেড’কে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, নতুন এ ব্যবস্থার ফলে করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে পণ্য সরবরাহকারী ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তাৎক্ষণিক অর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে।

এ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান একই সময়ে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা খাটাতে পারবে। আর করপোরেট গ্রাহক বা পণ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে একই সময়ে দিতে পারবে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া একটি বিলের বিপরীতে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থায়ন করা যাবে।

এদিকে, বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে ব্যাংকগুলোর অর্থায়ন বেড়েছে। বিগত বছরের তিন প্রান্তিকে সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ হয় এক লাখ ২৮ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ঋণ বিতরণ হয় ৪২ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। যা এর আগের প্রান্তিকে বিতরণ করা ঋণের তুলনায় ২৮৬ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি।

আরও পড়ুনঃ  সড়ক নাকি ডোবা

এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে সিএমএসএমই খাতে ৪১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে ব্যাংকগুলো। আর জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সিএমএসএমই খাতে ঋণ দেয়া হয় ৪৪ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে গত বছরের প্রথম নয় মাসে এসএমই ঋণ বিতরণ হয় এক লাখ ২৮ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। বিতরণ করা সব ঋণসহ এ খাতে ঋণের মোট স্থিতি দাঁড়ায় দুই লাখ ৪৫ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা। ছয় লাখ ৪৩ হাজার ৭২৬ গ্রাহক এ ঋণ পেয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, বিগত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এসএমই খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। পল্লী এলাকার এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয় নয় হাজার ১২৩ কোটি টাকার ঋণ। আলোচিত সময়ে জামানতবিহীন ঋণ ছয় হাজার ২৯৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে কুটির (কটেজ) প্রতিষ্ঠানে ৫৫৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। মাইক্রো খাতের প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র শিল্পে ২৪ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা এবং মাঝারি শিল্প খাতে ১১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো।

বিতরণ করা এসব ঋণের মধ্যে প্রস্তুতকারক শিল্পে গিয়েছে ১৫ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানে নয় হাজার আট কোটি টাকা এবং ব্যবসা উপ-খাতের প্রতিষ্ঠানে ১৭ হাজার ৩৩০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন