শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোশাকের নতুন বাজার

পোশাকের নতুন বাজার

ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের পোশাক রফতানির বাজার। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) অপ্রচলিত বাজারে ৩০৬ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি প্রায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ইউরোপ ও কানাডার বাজারেও রফতানি বেড়েছে।

এ বিষয়ে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান আনন্দবাজারকে বলেন, আমাদের প্রধান বাজার হলো ইউরোপীয় দেশগুলো, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা। আর অপ্রচলিত হলো এর বাইরে যেসব দেশে আমরা রফতানি করি। যেমন-চীন, জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন মার্কেট নিয়ে আমরা কাজ করছি। মধ্যপ্রাচ্য, কোরিয়াতে কি ধরণের প্রোডাক্ট চলে তা নিয়ে আমরা মার্কেট রিসার্চ করছি। এসব দেশে এক্সপোর্ট বাড়লে বড় দেশগুলোর ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমবে।

পণ্য ও মার্কেট ডাইভারসিফিকেশন নিয়ে জায়ান্ট গ্রুপের এ কর্ণধার বলেন, একদিকে আমরা আমাদের প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন করার চেষ্টা করছি আবার আমরা নতুন বাজার বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কিছুদিন আগে আমরা দুবাই গিয়েছিলাম। সেখানকার ক্রেতাদের আমাদের প্রোডাক্ট, কোয়ালিটি ও সক্ষমতা দেখানোর জন্য আমরা আবার যাব। এগুলো আগামীতে আমরা আরো করবো।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে শুধু জাপানের বাজারে ৫২ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার জাপানে পোশাক রফতানি বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর এ সময়ে রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে ৩৪ কোটি ১২ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে দেশটির বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল ২৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ফলে বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রাশিয়ায় রফতানি বেড়েছে ৩৮ দশমিক ১০ শতাংশ।

আরও পড়ুনঃ  সোনালি আঁশে বড় বাণিজ্য

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি হয়েছে ৮ কোটি ১৭ লাখ ডলারের। এর আগের বছরে একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে সেখানে রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

এই সময়ে ভারতের বাজারে পোশাক রফতানি হয়েছে ৩৬ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। গত বছর একই সময়ের ভারত থেকে পোশাক রফতানি আয় ছিল ২৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ভারতে পোশাক রফতানি থেকে আয় বেড়েছে ৫৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এছাড়া এ সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় পোশাক রফতানি হয়েছে ৩৯ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একইসময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফলে এক বছরের ব্যবধানে অপ্রচলিত এই বাজারে পোশাক রফতানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।

এদিকে, মেক্সিকোতে আলোচিত সময়ে পোশাক রফতানি হয়েছে ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের; গত বছরের একই সময়ে দেশটিতে এ পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে দেশটিতে রফতানি আয় বেড়েছে ৬৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে বাংলাদেশের পোশাক পণ্য রফতানি বেড়েছে ২৮ শতাংশের ওপরে। এ সময়ে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী পোশাক পণ্য বেচাকেনা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তবে ২০২১ সালে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে থাকে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  এবার আগে ব্যয় করব, পরে আয় করব: অর্থমন্ত্রী

এদিকে নন-কটন কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান আনন্দবাজারকে বলেন, নন কটন কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে এবং এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এটা বৃদ্ধির জন্য আমরা দুইদিক থেকে কাজ করছি। একটা হলো এটা বানানোর জন্য আমাদের টেকনোলজি এবং ম্যানপাওয়ার ট্রেইন করে মেশিনারি নিয়ে এসেছি অলরেডি। আরো আনছি। যেমন স্প্রিনিংয়ের সুতার মেশিন আনার ক্ষেত্রে বেশিরভাগই আমরা নন কটন মেশিন আনার চেষ্টা করছি। অন্যদিকে যে মার্কেটগুলোতে এটার ডিমান্ড আছে সেখানে আমরা যাচ্ছি। সুতরাং এ বছরই আমরা এদিকে রফতানি বেশ কিছুটা বাড়াতে পারবো।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন