শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেচ সংকটে বোরো চাষে শঙ্কা

বোরো চাষ
  • পানিশূন্য খাল-বিল-নদী
  • বৃষ্টির অপেক্ষায় চাষিরা

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরঅঞ্চলে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় বোরো আবাদ শুরু করছেন কৃষকরা। ধানের চারা রোপণের জন্য জমিপ্রস্তুত করা হচ্ছে। ফসলি জমিতে পানি সেচ, হালচাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ভোরে ক্ষেতের জমিপ্রস্তুত করতে চাষিদের বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এখন সহজেই চোখে পড়ে। কনকনে শীত উপেক্ষা করে কৃষকরা বোরো আবাদের জমিতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করছেন। কেউ জমিতে জৈব সার দিচ্ছেন আবার কেউ পানির পাম্প দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। অনেকেই বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করছেন। শীতের মৌসুমে কৃষকরা ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে কাজ করে যাচ্ছেন। হালচাষে কৃষকদের পাওয়ার টিলার ব্যবহার করতে দেখা যায়। এছাড়াও জমিতে কৃষকরা সার প্রয়োগ করছেন।

স্থানীয় কীটনাশক বিক্রেতা মঈন উদ্দিন জানান, কৃষকরা বোরো ধান রোপণ করছেন। এজন্য এখন দোকানে সার বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবছর ধানে পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এজন্য পোকা দমনের কীটনাশক মজুদ করেছি। স্থানীয় কৃষক বদরুল ইসলাম জানান, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদ করতে খরচও বেশি হয়। ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশারাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভবান হবো। তবে এবার বোরো ধান চাষে কৃষকরা পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাকালুকি হাওরে যে ছোট বড় খাল রয়েছে সেখান থেকে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। আবাদি জমির পরিমান বেশি হওয়ায় তুলনামূলক পানির যোগান নেই। পানির সংকট অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা দিলে বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় খালে বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো হয়েছে। আবার অনেক জায়গায় পানির অভাবে ধানের চারা রোপণ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন চাষিরা। জমির আশেপাশে পানির সুযোগ না থাকায় রয়েছে পানির সংকট। ভূকশিমইল ইউনিয়নের কৃষক সন্টু দাশ বলেন, পানির অভাবে এখনও বোরো ধান রোপন করি নি। জমির আশেপাশে পানির সুযোগ না থাকায় ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি না হলে এবার বোরো চাষের সম্ভাবনা নেই। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবুল হাসান জসিম বলেন, সেচের সংকটে শতাধিক চাষিরা ধান রোপণ করতে পারে নি। পানি না থাকায় চাষিরা বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  রেলপথে বাড়ছে পণ্য পরিবহন

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ২০০ হেক্টরে। এরমধ্যে হাইব্রিড-১ হাজার হেক্টও ও উফশী ৭ হাজার ১৮০ ও স্থানীয় জাত ২০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ৫৮৫ টন। গত বছর ৭ হাজার ৯১২ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রায় ধান উৎপাদন হয়েছে ৪৬ হাজার ৯৩৮ মেট্রিক টন। চলতি বছর বোরো ধান উৎপাদন বৃদ্ধিরলক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের উন্নতজাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ২ বিঘা জমিতে বিশেষ ধানের বীজ বঙ্গবন্ধু ১০০ দুই জন কৃষককে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন জানান, বোরো ধান উৎপাদনে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় উৎপাদনে উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সহযোগিতা করছে। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার/এম.আর

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন