শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আশ্রয়ন প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে

আশ্রয়ন প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে
  • চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ৬,৩১৬ কোটি টাকা
  • গৃহ প্রদান নীতিমালার বাস্তবায়ন
  • ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্প শেষ করা
  • গৃহমূল্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ

ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনে ২০১০ সালে নেয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ব্যয় চতুর্থবারের মতো বাড়ানো হচ্ছে। তিন কারণে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ৬ হাজার ৩১৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ছে। গতকাল সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির চতুর্থ সংশোধনীর জন্য তোলা হবে। বর্তমানে প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। চতুর্থ সংশোধনীতে একনেকে অনুমোদন পেলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বেড়ে দাঁড়াচ্ছে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। একনেক কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তিনটি কারণে প্রকল্পটি চতুর্থবার সংশোধনের প্রস্তাব করেছে- (ক) মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা-২০২০ বাস্তবায়ন। (খ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার সানুগ্রহ নির্দেশনা এবং (গ) আংশিক সংশোধিত ডিজাইন মোতাবেক একক গৃহের নির্মাণমূল্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ।

২০১০ সালে নেয়া এ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তৃতীয় সংশোধনীর চেয়ে ৬ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা খরচ বাড়িয়ে সবশেষ ধাপে চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন করা, আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে উপকারভোগীদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা হবে। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) এডিপিতে এ প্রকল্পটির জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  জ্বালানির অভাবে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯২টি ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় পরিবার পুনর্বাসন করা, ৫ হাজার ১৪৯টি পাকা ব্যারাক, চরাঞ্চলে ৫ হাজার ৭৮টি সিআইসিট ব্যারাক, ৪ হাজার ৩৯৩টি সেমিপাকা ব্যারাক নির্মাণ, ৬০টি বহুতল ভবন নির্মাণ, ১ হাজার ১২০টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, ৫৮০টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ, ৫৬৫টি পুকুরঘাট, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বক্স কালভার্ট, পাকা ড্রেন ও স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ, সকল প্রকল্প গ্রামে অগভীর/গভীর নলকূপ স্থাপন ও অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ করা।

২০১০ সালে নেয়া এ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২ হাজার ২০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। সময় বাড়ানো হয় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণের বেশি বা ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা করা হয়। মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত। তৃতীয় সংশোধনীতে এসে ব্যয় ১৪ কোটি টাকা কমে ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা করা হলেও সময় আরও তিন বছর বাড়ানো হয়। সম্প্রতি চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় আরও ৬ হাজার ৩১৬ কোটি ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ছে ১৩১ শতাংশ।

শুরুতে মূল প্রকল্পটি ৭০০টি আশ্রয়ণ গ্রাম স্থাপনের মাধ্যমে ৫০ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করার কথা ছিল। পরে শহর এলাকায় টিনের ঘরের পরিবর্তে বহুতল ভবন নির্মাণ ও অন্যান্য সুবিধাসহ বাড়তি ৫০ হাজার পরিবারের পুনর্বাসনের কাজ এতে যুক্ত হয়। তৃতীয় সংশোধনী পর্যন্ত সুবিধাভোগী আড়াই লাখে উন্নীত হয়। এখন তা প্রায় পাঁচ লাখে দাঁড়াচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ’ -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন