আমাদের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই নীতিমালা জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন। আর এই নীতিমালা অনুসরণ করেই আমরা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। আজ কেউই বলতে পারবে না যে, বাংলাদেশের সাথে কোনো দেশের বৈরী সম্পর্ক আছে। আমরা সবার সঙ্গেই মোটামুটি একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে চলছি।
আজ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের ‘ডিএসসিএসসি ২০২০-২০২১’ কোর্সের স্নাতক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ঐক্য নিয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদসহ নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা বিপন্ন মানবতার ডাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে প্রায় ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদেরও আশ্রয় দিয়েছি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের যে নাগরিকদের আশ্রয়দান এবং তাদের নিজ দেশে যাতে ফিরে যেতে পারে, তার ব্যবস্থার জন্য আমরা কিন্তু কারও সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত হইনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যে, আলোচনার মাধ্যমে তারা তাদের নাগরিকদের যেন ফিরিয়ে নিয়ে যায়। একটা বন্ধুসুলভ মনোভাব নিয়েই আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে যারা অন্যায় করছেন, নিশ্চই আমরা সেটা বলব, কিন্তু তারপরও তাদের নাগরিকদের তারা ফেরত নেবে, সেটা আমরা চাই। আমরা এতগুলো বাস্তুচূত মানুষ যারা নির্যাতিত হয়েছিল, তাদের আশ্রয় দিয়েছি, এ জন্য সারা বিশ্ব বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানা প্রতিকূলতা ও ঝুঁকিসহ করোনা মহামারীর মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বছর ২০২১ সালে পদার্পণ করেছি। ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করেছি, ২০২১ সাল হলো আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের বছর। করোনাভাইরাস সারা বিশ্বের সবকিছু স্তিমিত করে রেখেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে সব কিছুতেই একটা স্থবিরতা নেমে এসেছে। এর মধ্যেও দেশের মানুষের স্বাস্থ্যগত বিষয়ের পাশাপাশি আমরা দেশের অর্থনীতিসহ সব উন্নয়ন কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে, তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করেছি। এরই ধারাবাহিকতায়, সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ নিজস্ব উদ্ভাবিত উপায়ে অত্যন্ত অল্প সময়ে এবং কম খরচে নিরাপদ ইলিয়নি সলিউশন স্থাপন করে নিজস্ব সার্ভার ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের নিরাপদ অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। ফলে এক দিনের জন্যেও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়নি। সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। তাই এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব সদস্যদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
আনন্দবাজার/টি এস পি