বাংলাদেশে করোনার টিকা সংরক্ষণের জন্য সঠিক তাপমাত্রা ২/৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই দেশের জন্য করোনা প্রতিরোধী টিকা বেছে নিতে কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি সংরক্ষণের তাপমাত্রার দিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে।
ফলে আলোচিত ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেশে আনার কোন সম্ভবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু আশার দিক হচ্ছে, সংরক্ষণ-তাপমাত্রার দিক থেকে যুক্তরাজ্য, চীন ও রাশিয়ার কয়েকটি টিকা বাংলাদেশের জন্য উপযোগী। যুক্তরাজ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদন মেলার পর করোন মোকাবিলায় সারাবিশ্বেই নতুন করে আশার আলো দেখছে।
কিন্তু এই দুটি টিকা পৃথিবীর সবদেশে ব্যবহার উপযোগী নয়। কারণ ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়া এবং মডার্নার জন্য মাইনাস বিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই টিকা দুটি এ পর্যন্ত সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল হলেও বাংলাদেশের পরিকাঠামো অনুযায়ী সংরক্ষণ ও পরিবহণ একেবারেই অসম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এটা আমাদের জন্য উপযুক্ত হবে না। কারণ মাইনাস ৭০ ডিগ্রি’র ফ্রিজ আমাদের নেই।
তবে করোনা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এই টিকাটি কার্যকারিতার দিক থেকে ফাইজার ও মডার্নার চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ২/৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণযোগ্য। বিশেষজ্ঞরা জানান, কোন কারণে অক্সফোর্ডের টিকা অনুমোদন না পেলে বাংলাদেশের উপযোগী টিকা পেতে নির্ভর হতে হবে চীন-রাশিয়ার ওপর। কারণ এই দুটি দেশের টিকাও ২/৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণযোগ্য।
আইইডিসিআর’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম আলমগীর জানান, রাশিয়ায় বা চীনে যেসব ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে সেগুলোর দিকে আমরা নজর রাখছি। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।
অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ আরও জানান, নানা জার্নালে যে আর্টিকেলগুলো আসছে সেগুলর জন্য একটি সেল থাকলে বিশেষজ্ঞরা এগুলো গবেষণা করে বলতে পারতেন আমাদের জন্য এই ভ্যাকসিন ভাল। তাহলে সরকার সেটা নিয়ে কূটনীতি করলে আমরা একদিকে টিকাটা পাব, আরেক দিকে সেটা আমাদের কাজেও লাগবে।
কর্মকর্তারা জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অক্সফোর্ডর টিকা দেশে এসে পৌঁছবে। আর কোভ্যাক্সের অধীনে টিকা মিলতে পারে মার্চ-এপ্রিলে। সেই সাথে গণহারে টিকা প্রয়োগের জন্য তৈরি আছে দক্ষ জনবলও।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে