শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিথ্যা তথ্য দেয়ায় ১৪৬ পোশাক কারখানা বাদ পড়ছে

তৈরি পোশাক শিল্পের প্রথম দিকের উদ্যোক্তা হিসাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ব্যাংকের অসহযোগিতা ও ক্রেতার কারসাজিসহ অনেক কারণে একের পর এক প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ ও পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৫ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পে রুগ্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয় ২৭৯টি প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু সব মিলিয়ে ২৯৭টি প্রতিষ্ঠান রুগ্ণ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার দাবি জানায় । ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে রুগ্ণ স্বীকৃতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়-দেনা অবসায়নের অঙ্গীকার করা হয়।

এর পরবর্তী সময়ে মধ্যে ১৪৬টির দাবি মিথ্যা বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে। ইতিমধ্যে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে অন্য ১৩৩ রুগ্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ অঙ্গীকার অনুসারে সরকারি সুবিধা দাবি করা হয়। বিশেষ ভর্তুকি দিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়-দেনা অবসায়নের অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।

বিজিএমইএ বলছেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে বন্ধ পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার পর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে পোশাক শিল্পের এ ধরনের ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের সমুদয় ব্যাংকঋণ অবসায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে তা জাতীয় সংসদে পাস হয়। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের আওতাধীন বিবেচনাযোগ্য রুগ্ণ বা বন্ধ পোশাক শিল্প রয়েছে ১৩৩টি। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে এসব প্রতিষ্ঠানের মূল ঋণের মোট পরিমাণ ২৩৮ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা ।

রুগ্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রকৃত রুগ্ণ ১৩৩ প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রকল্প। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, পূবালী, জনতা ও বেসিক ব্যাংক লিমিটেড। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইনভেস্টমেন্ট (বর্তমানে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক), এক্সিম, মার্কেন্টাইল, সাউথইস্ট, ন্যাশনাল, প্রাইম, এনসিসি, আইএফআইসি, উত্তরা, ন্যাশনাল, ডাচ্-বাংলা, আল-আরাফাহ্ ও দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড।

আরও পড়ুনঃ  শিক্ষায় বড় ক্ষতি

সেপ্টেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয় বরাবর এ ১৩৩ প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা অবসায়নের অনুরোধ জানায় বিজিএমইএ। পাশাপাশি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিজিএমইএ পর্ষদের প্রতিনিধিদের এক সাক্ষাতেও এ নিয়ে তাত্পর্যপূর্ণ আলোচনা হয়। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত অনুরোধ জানানো হবে।

তালিকায় সুদ-আসল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যাংকঋণ রয়েছে সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার প্রকল্প তন্বী নিটওয়্যার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানের সুদ-আসল মিলিয়ে মোট ঋণের পরিমাণ ২৬ কোটি টাকা। এর মাঝে আসল ১৪ কোটি টাকা। বাকি ১২ কোটি টাকা সুদ। তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ ১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখার কাছ থেকে এ ঋণ নিয়েছিল ইয়ং ফ্যাশন প্রাইভেট লিমিটেড।

আনন্দবাজার / ফাহির

সংবাদটি শেয়ার করুন