রোহিঙ্গা সঙ্কটে প্রতিনিয়তই কমছে অনুদানদাতা। তবে বাড়ছে ‘ঋণের’ প্রস্তাব। ইতোমধ্যে ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় মাল্টি-সেক্টর’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন গত ৬ অক্টোবর অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
ওই সংশোধনীতে প্রকল্পের খরচ এক হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে এক হাজার ৯৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ২০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বাকি এক হাজার ৯৬৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক ও কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. জাকির হোসেন আকন্দ জানান, বিশ্বব্যাংকের সাথে সমঝোতা টেবিলে আমি কথা বলেছি। তারা আমাদের কোন অনুদান দিতে চায়নি। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশ আর কোনোভাবেই কোন অনুদান পাবে না। যেহেতু আমাদের আর্থিক অবস্থার আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই এখন তারা ঋণ দেবে আমাদের।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এসকেইউএস প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা জানান, মহামারি করোনার কারণে বর্তমানে রোহিঙ্গাদের জন্য ফান্ড বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেক ডোনার আগে চলে গেছে, অনেকেই এখন ডোনার চলে যাচ্ছে। অনেকে ফান্ড দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে।
এভাবে সমঝোতার মাধ্যমে দ্রুত রোহিঙ্গাদের অনুদান কমতে থাকলে ও ঋণ নিয়ে রোহিঙ্গাদের পেছনে খরচ করতে হলে বাংলাদেশকে কেমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হতে পারে? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এটা মনে রাখতে হবে যে, ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। আর্থিক সহায়তা ছাড়া তাদের পক্ষে সেখানে টিকে থাকা খুবই দুরূহ। তাই অর্থ নেওয়ার ব্যাপারে ঋণ আকারে নেওয়া বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই অনেক একটা বড় চাপ। আর যদি না দেয়, তাহলে এখানে নানা ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে