শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেস মাস্কের আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারেনি বাংলাদেশ

করোনার কারণে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাকের ওপর বড় রকমের আঘাত পড়েছে। পাশপাশি ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণের (পিপিই) মতো নতুন কিছু পণ্য রফতানির সুযোগ করে দেয় মহামারি করোনা। বিশেষ করে ফেস মাস্ক রফতানির মাধ্যমে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। তবে সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেননি দেশের পোশাক খাতের রফতানিকারকরা।

করোনায় পশ্চিমা দেশগুলোতে খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেলে স্থবির হয়ে পড়ে বাংলাদেশের রফতানিমুখী পোশাক কারখানার উৎপাদন। কিন্তু এ সংকটের মধ্যে সারাবিশ্বে চাহিদা বেড়ে যায় ফেস মাস্কসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর। যেহেতু বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে বৃহৎ পোশাক রফতানিকারক, সেহেতু এ বাজারের জন্য পিপিই উৎপাদন করে রফতানি খাতকে বৈচিত্র্যময় করার একটি সম্ভাবনা ও সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান পিপিই রফতানি করেছেও, যদিও তা প্রত্যাশার তুলনায় খুবই অল্প।

আউটারওয়্যার প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের মধ্যে দেশের অন্যতম পোশাক কারখানা স্নোটেক্স। করোনায় দেশের রফতানিমুখী সব কারখানার মতো উৎপাদন সচল রাখা নিয়ে বিপাকে পড়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু করোনা সংক্রমণের প্রভাব বাড়ার কিছুদিনের মধ্যেই সারাবিশ্বে পিপিইর চাহিদা বেড়ে গেলে কারখানা সচল রাখা ও পোশাক খাতে বিনিয়োগকে বৈচিত্র্যময় করার সুযোগ গ্রহণ করে স্নোটেক্স। মাস্কসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। বৈশ্বিক চাহিদা বাড়তে থাকায় ক্রয়াদেশ পেয়ে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত ২৬ লাখ পিস মাস্ক রফতানিও করে স্নোটেক্স। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ চালানটি রফতানি হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। স্নোটেক্সের মতোই পিপিই রফতানির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সুযোগ ছিল দেশের রফতানিমুখী অন্যান্য পোশাক কারখানারও। যদিও তা কাজে লাগাতে পারছে না সবাই।

আরও পড়ুনঃ  বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করছে টাইগাররা

এখন পর্যন্ত মাস্ক ও পিপিই রফতানি করে এমন ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের নাম জানা গেছে বিজিএমইএ সূত্রে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্নোটেক্স, ওনাস ডিজাইন, ওনাস গার্মেন্টস, এসকোয়ার, বেক্সিমকো, ডেকো, এপিএস, আদুরী, স্মার্টেক্স, আমান, মোহাম্মদী, টিম, কাপকেক, উর্মী, রোমো, গ্লোবাল নিটওয়্যার, হরাইজন ও বিডবডি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো বাজারে পিপিই রফতানির এ সুযোগ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন, ভিয়েতনাম ও শ্রীলংকা। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার ইউএনকমট্রেড এবং মার্কিন ট্রেড কমিশন আইটিসির তথ্য অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মাস্ক রফতানিতে এগিয়ে থাকা দেশ হচ্ছে চীন। এই তিনটি বাজারে ২০১৯ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে চীনের মাস্ক রফতানি বেড়েছে ৭০০ শতাংশের বেশি। একই সময়ে শ্রীলংকা থেকেও মাস্ক রফতানি বেড়েছে প্রায় ৭০০ শতাংশ এবং ভিয়েতমানের রফতানি বেড়েছে প্রায় ৩০০ শতাংশ। ইন্দোনেশিয়ারও বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ সময়ে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছে ১০০ শতাংশের কিছু বেশি।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন