একটি ফুল কুঁড়িতেই শেষ হয়ে যায়, রাসেল আর ফুটতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১৮ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেল-এর ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ছোট ভাই শেখ রাসেলের কথা স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে রাসেলের জন্মদিন। ১৯৬৪ সালে রাসেলের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু তার জীবনটা শেষ হয়ে যায়, একটি ফুল কুঁড়িতেই শেষ হয়ে যায়, রাসেল আর ফুটতে পারেনি। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে তাকে নির্মমভাবে চিরবিদায় নিতে হয়।
তিনি বলেন, রাসেলের জন্মদিনের কথাটা এখনও আমার মনে পড়ে। একটা ছোট্ট শিশু আসবে, আমাদের পরিবারে, আমি কামাল-জামাল, রেহানা আমরা সবাই খুব উৎসাহিত এবং বেশ উত্তেজিত ছিলাম কখন সেই শিশুটির কান্না আমরা শুনবো, কখন তার আওয়াজটা পাবো, কখন তাকে কোলে তুলে নিবো। আর সেই ক্ষণটা যখন এলো তা আমাদের জন্য অত্যন্ত একটা আনন্দের সময় ছিল। ছোট্ট শিশুটি আমাদের সবার চোখের মনি ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, ৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন আমার বাবা মুক্তি পান তখন যে জিনিসটা সব সময় দেখতাম, রাসেল সর্বক্ষণ- মনে হয় যেন ওর ভেতরে একটা ভয় ছিল যেকোন মুহূর্তে বুঝি বাবাকে হারাবে, তাই তিনি যেখানেই যেতেন যে কাজই করতেন এবং খেলার ছলে কিছুক্ষণ পর পরই একবার করে সে দেখে আসতো যে বাবা ঠিক আছে তো। বাবা মিটিং এ থাক বা যেখানেই থাক সে ছুটে ছুটে যেত।
শেখ রাসেলের অকাল মৃত্যু নিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, যাক দেশ স্বাধীন হলো। স্বাধীনতার পর তখনো সে বাবার পাশে ছায়ার মতো ঘুরে বেড়াতো। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছর সে বাবাকে কাছে পেল। আর তারপরে ১৫ আগস্ট সব শেষ।
ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর ছাত্রছাত্রীরা সকলে পড়াশোনায় মনযোগী হবেন। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের ঘরে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছাবে। আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখে আগামী দিনে এ দেশে মানুষের কর্ণধার হবে। সুন্দর ভাবে বাঁচবে, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে শহীদ শেখ রাসেল এনিমেটেড ডকুমেন্টরি ‘বুবুর দেশ’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন, শেখ রাসেল এর জীবনীর উপর প্রকাশিত বই ‘শেখ রাসেল আমাদের আবেগ, আমাদের ভালবাসা’ এর মোড়ক উন্মোচন ও ছবি প্রদর্শনীর উদ্বোধন, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শহিদ শেখ রাসেল এর ‘ম্যুরাল’ উন্মোচন ও ‘শহিদ শেখ রাসেল ভবন’ উদ্বোধন করেন।
এছাড়াও তিনি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কার্যক্রম সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র অবলোকন, ‘স্মৃতির পাতায় শেখ রাসেল’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপসহ পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস