প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবনা মেনে মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান রোহিঙ্গারা। আজ (২৫ আগস্ট) রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার তিন বছর পূর্তি হয়েছে। এই উপলক্ষ্যে এক আলোচনায় এমনটাই জানিয়েছেন নেতারা।
আসলেই কি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে চান-এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা মোস্তফা কামাল জানান, মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। এর আগেও তারা অনেকবার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। এখন কেবল একটাই চাওয়া যে দেশে আশ্রিত হয়েছি, সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) দেওয়া প্রস্তাবগুলো তারা মেনে নিক। এ প্রস্তাবগুলো ওরা (মিয়ানমার সরকার) মানলে আমরা মিয়ানমারে ফিরতে পারি।
কক্সবাজারের টেকনাফের নতুন লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা মোস্তফা কামাল মিয়ানমারের মংডু হাসসুরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। গত ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টে সেদেশের সেনা অভিযানের মুখে রোহিঙ্গাদের ঢলের সঙ্গে পরিবার নিয়ে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন তিনি।
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিপুল এলাকাজুড়ে সেসময় মাত্র কয়েক মাসের মাথায় যে সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল, তিন বছরে তাদের একজনকেও ফেরত পাঠানো যায়নি।
তাদের রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের যে অবদান তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে মোস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মৃত্যুকূপ থেকে রক্ষা করে বাঁচিয়ে রেখেছে। সেখানে আবার কীভাবে জেনেশুনে মৃত্যুকূপে ফিরি! তাই আমাদের একটাই চাওয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে শুরুতে যে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন, মিয়ানমার সেগুলো মেনে নিক। মেনে নিলে ফিরে যেতে আমরা প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানিতে যে প্রাথমিক রায় এসেছে, এতে আমরা অনেক আশাবাদী। এই মামলার ফলে রোহিঙ্গারা অনেকে সাহস পেয়েছে যে তারা একদিন মিয়ানমারে ফিরতে পারবে। এটাই সত্যি যে বিশ্বের যে কোনও দেশে কোনও জনগোষ্ঠীর ওপর ‘জেনোসাইড’ করলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এটি তার একটি উদাহরণ। এতে অনেকে শিক্ষা পাবে এবং এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস