ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাড়া কমিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না ভাড়াটিয়া

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গত দুই মাস ধরে রাজধানীর বেশিরভাগ বাড়িতেই এখন ভাড়াটিয়া সংকট দেখা দিয়েছে। বছরের পর বছর যে সকল ফ্ল্যাট ফাঁকা ছিলো না এখন তা  ফাঁকা পড়ে আছে। নতুন মাসের (জুলাই) তিন দিনও পার হয়েছে তবুও মিলছে না ভাড়াটিয়া।

বাড়ির মালিকরা ভাড়াটিয়ার খোঁজে বাসার সামনে শুধু ‘টু লেট’ টাঙিয়ে থেমে নি ‘বাসা ভাড়া হবে’— এমন ছোট ছোট পোস্টার লাগিয়েছেন পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি, বড় রাস্তার পাশে। তবু কারও আগ্রহ দেখছেন না তারা।

রাজধানীর বনশ্রীর একটি বাড়ির মালিক জামাল আহমেদ বলেন, লকডাউনের কারণে অনেক ভাড়াটিয়া তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। এরপর পরিবারের উপার্জনের ব্যক্তিটি বাসা ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনো মেস বা ছোট বাসায় উঠেছেন। যে কারণে অনেক বাসা এখন ফাঁকা হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই চাকরিচ্যুত হয়েছেন। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছেন, যাদের ব্যবসা একেবারেই বন্ধ, তারা পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন— এসব কারণে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একটি বাড়ির মালিক এরশাদ আলী। তিনি বলেন, বিগত দুই মাস ধরে আমার ছয়তলা বাসার দুটি ফ্ল্যাট ফাঁকা, আর চলতি মাস ধরলে তিন মাস। ওই দুই ফ্ল্যাটে আগে যারা ছিলেন তারা চাকরি হারানোর পর বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে গেছেন। এরপর থেকে আর কোনো ভাড়াটিয়া ওঠেনি। কোনোভাবেই ভাড়াটিয়া পাচ্ছি না, এমনকি ভাড়া দুই হাজার টাকা কমিয়েও দিয়েছি। তবু কোনো ভাড়াটিয়া পাচ্ছি না।

ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, অনেকেরই আয় কমেছে। এই অবস্থায় বাসা ভাড়া পরিশোধ করা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতেও বাড়ি মালিকরা কোনো ভাড়াটিয়ার পাশে দাঁড়াননি। অল্প পরিমাণে ভাড়াও মওকুফ করেননি। তাই বাধ্য হয়ে অনেক ভাড়াটিয়া রাজধানী ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন।

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক হিসাবে থেকে জানান যায়, গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পায় প্রায় ৪০০ শতাংশ। আর একই সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় ২০০ শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ে নিত্যপণ্যের দামের তুলনায় বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ।

সংগঠনটির অরেক এক হিসাব বলছে, ঢাকার ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া তাদের আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া প্রায় ৫০ শতাংশ, ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ টাকা বাসা ভাড়ায় ব্যয় করেন।

আনন্দবাজার/এম.কে

সংবাদটি শেয়ার করুন