শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ুদূষণে ২০২৩ সালে শীর্ষে বাংলাদেশ: ডব্লিউএইচও

বায়ুদূষণে ২০২৩ সালে শীর্ষে বাংলাদেশ ডব্লিউএইচও

বায়ু দূষেণে বিশ্বের ১৩৪টি দেশের মধ্যে গেল বছর (২০২৩) শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান ও ভারত, দক্ষিণ এশিয়ার এই তিন দেশে বায়ুদূষণের হার সবচেয়ে বেশি।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, এই তিন দেশের বাতাসে যে পরিমাণ দূষিত কণা রয়েছে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বায়ুদূষণের ওপর ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট-২০২৩ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইকিউএয়ার। প্রতিবেদনে বলা হয়,বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে পাকিস্তান দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। আফ্রিকার দেশ চাদ আর ইরানকে হারিয়ে যথাক্রমে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে বাংলাদেশ ও ভারত।

বাংলাদেশের বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-২.৫ এর পরিমাণ ২০২৩ সালে ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। পাকিস্তানের বাতাসে এর পরিমাণ ছিল ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাতাসে এটি থাকা উচিত ৫ মাইক্রোগ্রাম। বাতাসে এই পিএম ২.৫ বেশি হলে ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এ নিয়ে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি সায়েন্স ম্যানেজার ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোয়েডার এই তিন দেশের ভয়াবহ বায়ুদূষণের কারণ সম্পর্কে বলেছেন, জলবায়ু পরিস্থিতি ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই তিন দেশে পিএম-২.৫ এর ঘনত্ব আকাশ ছুঁয়েছে। আরেকটি বড় কারণ হলো দূষিত পদার্থের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। শ্রোয়েডার আরও বলেন, বায়ুদূষণের অন্যান্য কারণ হলো-দেশগুলোর কৃষি ব্যবস্থা, শিল্পায়ন ও জনসংখ্যার ঘনত্ব। ২০২২ সালে বিশ্বে বায়ুদূষণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল শেষ থেকে পঞ্চম আর ভারতের অবস্থান ছিল অষ্টম।

আরও পড়ুনঃ  জয়পুরহাটের আলু যাচ্ছে ১২ দেশে

এছাড়া, ভারতের বায়ুদূষণও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ডের চেয়ে ১১ গুণ বেশি। রাজধানী দিল্লি সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে দূষণের হার ৯২.৭ মাইক্রোগ্রাম।

বাংলাদেশে অকালমৃত্যুর ২০ শতাংশই হয় বায়ুদূষণজনিত রোগের কারণে উল্লেখ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ ফিরোজ খান বলেছেন, বায়ুদূষণ সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায়ে দেশের জিডিপির অন্তত ৪ থেকে ৫ শতাংশ ব্যয় হয়।

উল্লেখ্য, ১৩৪ টি দেশ ও অঞ্চলের ৩০ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে আইকিউএয়ার। ২০২৩ সালে ডব্লিউএইচও’র মানদণ্ড পূরণ করেছে অস্ট্রেলিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, গ্রেনাডা, আইসল্যান্ড, মরিশাস এবং নিউজিল্যান্ড। ২০২২ সালে বায়ুদূষণের শীর্ষ দেশ শাদকে এবার তথ্যের অপ্রাপ্যতার কারণে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর ইরান নিজেদের এই তালিকা থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন