ঢাকা | বুধবার
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজের কেজি ২৩০ টাকা

ভারতের রপ্তানি বন্ধের খবরে রাজধানীতে পেঁয়াজের কেজি পাইকারিতে একদিনেই ছাড়ালো ২০০ টাকা। যা খুচরায় গিয়ে গুনতে হচ্ছে ২৩০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে দাম নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার অভিযান শুরু করলেও তা কাজে আসছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। বাজার তদারকি করতে গিয়ে সংস্থাটি বলছে- অনৈতিকভাবে দাম বেড়েছে পেঁয়াজের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগস্টে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতীয় শুল্ক আরোপের খবরে বাজারে পেঁয়াজের দাম ঠেকে ১০০ টাকায়। চল্লিশ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার চার মাস পর এবার ভারত গেলো বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় দেশের বাজারে এক রাতের ব্যবধানে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে পেঁয়াজের দাম।

রাজধানীর কাপ্তানবাজার ঘরে দেখা যায়, পেঁয়াজের বাজার প্রায় ক্রেতাশূণ্য, দুই একজন যারা আসছে দাম শুনে কেউ পরিমাণে কম নিচ্ছেন আবার কেউ পেঁয়াজ না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় একরাতের ব্যবধানে পাইকারিতেই দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। যা খুচরা বাজারে ক্রেতার কাছে পৌঁছাচ্ছে আরও ২০/৩০ টাকা বেশি দরে। ফলে কমেছে ক্রেতা, ভাটা পড়েছে বিক্রিতে।

আড়তে গিয়ে দেখা গেলো, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। ভারতের রপ্তানি বন্ধের পাশাপাশি গত দুইদিনের বৃষ্টিকেও দাম বাড়ার কারণ দেখাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসলেও আমদানি না হলে পেঁয়াজের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তারা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আমাদের দেশের কাঁচা পেঁয়াজটা আসার আগেইতো ভারতের পেঁয়াজ বন্ধ হলো। দেশীয় পেঁয়াজ আসতে আরও ২০ দিন সময় লাগবে। একারণে বাজারে এই সংকট দেখা দিয়েছে। আগামী ১০ দিনে দাম কমবে বলে মনে হচ্ছে না।’

এ অবস্থায় বাজারের ফর্দ নিয়ে বের হওয়া অনেকেই যেন হিসেব মেলাতে পারছেন না ক্রেতারা।

তারা বলেন, ‘দিন দিন সব কিছুর দাম বাড়ছে। এক কেজি পেঁয়াজ যদি ২০০ টাকায় কিনতে হয় তাহলে জীবন কেমনে চলবে?’

পেঁয়াজ নিয়ে বাজারে যখন এই বিশৃঙ্খলা তখন দামের লাগাম টানতে দুপুরে রাজধানীতে অভিযানে নামে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। অভিযান টের পেয়ে তৎক্ষণাৎ দাম কমিয়ে দেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসময় ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে আগেই খবর পেয়ে যাওয়ায় অনেক দোকানে বিক্রেতা ছিলেন না।

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর মনে করছে পাইকারি বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রেখে পেঁয়াজের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব।

বছর বছর বাড়ে পেঁয়াজের দাম, আর বার বারই অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার। তবে এসব অভিযানে ভোক্তার কতটুকু লাভ হয় তা প্রশ্নবিদ্ধ।

এদিকে আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ভোক্তার উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা জানান, ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাতে অধিদপ্তরের ৪ জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৪টি আলাদা টিম বাজার অভিযান পরিচালনা করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শ্যামবাজার এলাকায় অভিযান চালাবেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এলাকায় অভিযানে থাকবেন ভোক্তা-অধিকারের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান। এর বাইরে মিরপুরের শাহ আলী মার্কেট এলাকায় অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুস সালাম এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযানে থাকবেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ আলম।

অভিযান প্রসঙ্গে ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে খবর পেয়ে আমরা মাঠে নেমেছি। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে।

গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। এরইমধ্যে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বাড়তে শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন