শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইলিশের বাজারে আড়তদার-জেলেদের মুখে হাঁসি

ইলিশের বাজারে আড়তদার-জেলেদের মুখে হাঁসি

ইলিশ শূন্য নদী ও জেলে পল্লীতে হাহাকার কাটিয়ে হাঁসির বন্যা বইতে শুরু করছে। চলমান সময়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরে ইলিশ ঘাট ও বাজারে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে ইলিশের কিছু চাপ কমলেও দাম এখনো কিছুটা বাজার চওড়া রয়েছে। প্রতিকেজি বড় সাইজের ইলিশ দাম ১১শত থেকে ১৪ শত টাকা। ছোট আর মাঝারী সাইজের ইলিশ কেজি ৪শত থেকে ৭শত টাকা পর্যন্ত ঘাটে বেচা- বিক্রি হচ্ছে।

কমলনগর উপজেলার মাতাব্বর হাট মাছঘাটে কিছু ঘুরে ইলিশের তাজা বাজার ও চাহিদা দেখা গেছে। ঘন্টায় প্রচুর ইলিশ নদী থেকে জেলেরা ঘাটে নিচ্ছে এবং আড়তদারের বাক্সে বিক্রি করছে। বড় সাইজের ইলিশের বাজার হালি হাতে ৫হাজার থেকে ৭হাজার এবং ছোট সাইজের হালি ৪শত থেকে ৬শত টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

ঘাটের প্রতিটি বাক্সে ঘন্টা ব্যাপী ইলিশের রমরমা দেখা গেছে। আড়তদার এবং জেলেদের চোখে-মুখে কিছুটা হাঁসি ফুটে ওঠে। ফুরফুরে মেজাজে নদীতে যাচ্ছে আর ইলিশ নিয়ে কূলে ফিরছে।

জেলে আইজল মাঝি বলেন, কিছুদিন পূর্বে ইলিশ শূন্য নদী ছিল। প্রতিদিন চোখে-মুখে হাহাকার ছিল। কিভাবে দাদন ও সংসার চালামু চিন্তা ছিল। এখন শুকরিয়া আদায় করছি-নদীতে ইলিশ মাছ পড়ছে। আড়তদার ও জেলেরা খুবই আনন্দিত এবং খুশি।

উপজেলার হাজির হাট বাজারে সকাল এবং সন্ধ্যায় ইলিশ মাছের আলাদা বাজার দেখা যায়। ক্রেতা-বিক্রেতার প্রচুর ভীড় জমে। বাক্সগুলোতে ইলিশ আর ইলিশ দেখা যাচ্ছে। দাম এবং ক্রেতা-বিক্রেতারা সমান তালে বেচা-বিক্রি করছে।

ক্রেতা চর জাঙ্গালিয়া’র ইয়াছিন আরাফাত বলেন, বাজার এবং ঘাটে ইলিশের দামে কিছুটা প্রার্থক্য রয়েছে। ঘাটে মাছ কিছুটা সস্তা হলেও বাজারে একটু বেশি। তবে আলহামদুলিল্লাহ- নদীতে মাছ পড়ছে যার কারণে বাজার এবং ঘাটে পাচ্ছি। দাম নিয়ে তেমন একটা মাথা ব্যাথা নেই।

আরও পড়ুনঃ  শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

প্রবাসী মো.রেদোয়ান বলেন, সকালে হাজির হাট বাজার থেকে ইলিশ কিনেছি। দাম একটু বেশি ছিল। বিকেলে মেহমান আসার কারনে মাতাব্বর হাট মাছ ঘাট থেকে বড় ইলিশ কিনেছি। দাম দু’জায়গায় একটু ভিন্ন ছিল। তবে খুব খুশি ইলিশ মাছ বাজারে সবসময় পাওয়া যাচ্ছে।

রামগতি ভয়ারচর মাছ ঘাটের আব্দুর রহিম মাঝি জানান, নদীতে ইলিশ নেই। জেলেদের চোখে-মুখে কালো ছায়া নেমে এসেছে। দাদন আর ধার-কর্জে জেলে এবং আড়তদারগণ জর্জরিত ছিল। এখন আল্লাহ দবারে শুকরিয়া। গত কিছুদিন যাবত নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। জেলে এবং আড়তদারগণ কিছুটা ঋণের বোঝা কমবে।

জেলার রামগতি-কমলনগরের মেঘনা নদীর ইলিশ স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে দেশ এবং দেশের বাহিরে রপ্তানি হচ্ছে। মেঘনার ইলিশের স্বাদ খুবই আলাদা ও সু-স্বাদু। মেঘনার ইলিশের চাহিদা দেশের ব্যাপক। ইলিশ রপ্তানি ও বেচা-বিক্রিতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হচ্ছে।

উপজেলা কমলনগরের মৎস্য কর্মকর্তা মো.আব্দুল কুদ্দুস বলেন, মেঘনা নদীতে ইলিশের আকাল ছিল। এখন ইলিশ পড়ছে। তবে নদীতে ইলিশের আকাল হওয়ার কারণ অনেক সময় নাব্যতা, ডুবচর এবং পলিস্তর জমে খাড়ি তৈরি হয়ে পানির ভিন্নস্রোত প্রবাহিত হলে মাছের গতিপথ রুদ্ধ হয়। তবে এটা স্থায়ী নয়।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন