বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনীতিকরা কথা বলছেন, উপদেশ দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও কূটনীতি বিশেষজ্ঞ ড. ইমতিয়াজ আহমেদ দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, কূটনৈতিকদের কোনো দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলাটাই হচ্ছে আইনবহির্ভুত কাজ।
তারা কোনো দেশের রাজনীতি বা অর্থনীতিতে ঢুকতে পারেন না। কূটনীতিবিদরা নিজেদের দেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের যে সম্পর্ক রয়েছে সে বিষয়ে কথা বলবে বা ব্যবস্থা নিবে। সমস্যা-সম্ভাবনা বিষয়ে আলোচনা করবে। তবে উন্নয়নশীল দেশে কূটনৈতিকরা বেশি হস্তক্ষেপ করে থাকে। নিজেদের ইচ্ছায় কাজ চাপিয়ে দেন। এক বিষয়ে চাপ দিয়ে অন্য কাজ হাসিল করে নেন।
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতির বিভাজনের কারণেই কূটনীতিকরা এসব কাজ করার সাহস পান। নিজেদের সমস্যাগুলো নিজেরা সমাধান করলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। আর আমাদের দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় বাইর থেকে এসে কেউ সমাধান করে দিয়েছে এমন উদাহরণ নেই বললেই চলে।
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আরো বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতিতে পেশিশক্তি বিরাট ভূমিকা রাখলেও যুক্তরাষ্ট্রে ডলার সেই ভূমিকা রাখে। সেখানে তো মিলিনিয়ার না হলে মনোনয়নই পায় না। একেক দেশের সমস্যা একেক ধরনের হয়ে থাকে। বাইর থেকে নিজের পছন্দ চাপিয়ে দিলে সেটি অন্য দেশে গ্রহণীয় নাও হতে পারে।
গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে আগে ও পরে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদ, যুক্তরাষ্ট্রের হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘের স্থানীয় প্রতিনিধির উদ্বেগ ও কথাবার্তা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এই বিষয়ে তাদের কথা বলা ঠিক হয়নি। বাংলাদেশে যে সংস্কৃতি সেখানে কিছু বিষয় পরিবর্তন আনতে হবে। তার অর্থ এই নয় যে, অন্যরা এসে কথা বলবে। সেই কথা এখানকার জনগণ মেনে নিবে। বরং প্রত্যেক দেশেই নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
আনন্দবাজার/শহক