শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মরিচের ফলন ভালো, দামে হতাশা

মরিচের ফলন ভালো, দামে হতাশা
  • স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার দাবি চাষিদের

জামালপুরের বিভিন্ন চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে মরিচের ভালা ফলন হয়েছে। তবে, উৎপাদন খরচের তুলনায় মরিচের দাম না থাকায় চাষিদের মাঝে হাতাশা বিরাজ করছে।

যাতায়াত গাড়িভাড়া, সার-কীটনাশকের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের বিগত বছরের তুলনায় এবার মরিচ আবাদে খরচ অনেক বেশি হয়েছে। পাশাপাশি সার সংকটের মুখোমুখি হয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে সে তুলনায় মরিচের দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় কৃষকগণ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, চরাঞ্চলগুলোর মধ্যে নাওভাংগার চর, বেনুয়ার চর, চর আদ্রা, জামিরা, হাজিপুর, ছাতারিয়া, মানিকপটল, আদারভিটা, কুলকান্দি, হাজিপুর, হাজরাবাড়ি, শিধুলী, রৌহা, বাটিকামারী, শ্যামপুর, হরিপুর, মল্লিকপুর, চান্দেরহাওড়া, টুপকার চর, কাপাসটিয়া গ্রামসহ জেলার দুই শতাধিক গ্রামে মরিচের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ সময় চাষিরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন মরিচ ক্ষেতের যত্ন ও মরিচ সংগ্রহে।

জামালপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বলেন, জেলার প্রায় ২২ হাজার চাষি ৯ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। এরমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫০ হেক্টর জমি। চাষিরা প্রতি বিঘায় ৪০ মণ ফলন ধরে প্রায় ১৮ হাজার ৫১৫ মে. টন মরিচ সংগ্রহ করতে পারবেন। তিনি জানান, অনুকূল আবহাওয়ায় কৃষকরা চলতি বছর তাদের জমি থেকে ভালো ফলন পাচ্ছেন। এছাড়া যমুনা নদীবর্তী এলাকায় গত বন্যায় পলি জমে মরিচের বাম্পার ফলনে সাহায্য করেছে।

আরামনগর, আদ্রা, বাউশি, হাজরাবাড়ী, হাজিপুর, শ্যামপুর, কালিবাড়ি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি মণ ১২শ’-১৩শ’ টাকায় মরিচ বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ৯৯ দিনে পর করোনায় সর্বনিম্ন মৃত্যু

মেলান্দহ উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, এ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের পাঁচটি চর এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক প্রায় ১২শ’ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করেছেন, এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০০ হেক্টর। মেলান্দহের বারেক মন্ডল বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে হাইব্রিড মরিচ চাষ করেছি। ৬০ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ মণ কাঁচা মরিচ সংগ্রহ করেছি এবং বিক্রি করেছি ৫০ হাজার টাকা। মরিচ চাষ করে এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখিনি।

সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের কৃষক রমজান আলী জানান, আমি ৭ বিঘা জমিতে ফসল আবাদ করেছি। চাষে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হলেও আমি বাজারে ১ লাখ ৪০ হাজার মরিচ বিক্রি করেছি। মরিচের দাম বাড়লে কিছুটা মুনাফা পাওয়া যাবে এবং বাজার দর না বাড়লে চাষের খরচ জোগাড় করা কঠিন হবে বলে তিনি জানান।

কৃষকদের দাবি, চাষাবাদের জন্য সরকারের উচিত স্বল্প সুদে বা বিনা সুদে ঋণ দেওয়া, যাতে আর্থিক সংকট ছাড়াই পণ্য উৎপাদন সম্ভব হয়।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন