শুক্রবার, ২৬শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমাবেশ ঘিরে ব্যবসায় মন্দা

সমাবেশ ঘিরে ব্যবসায় মন্দা
  • বাজারে আসেননি ক্রেতা, বেচাবিক্রি কম
  • দুই দলের প্রতি আহবান একসঙ্গে বসে তারা সমস্যার সমাধান করুক: ব্যবসায়ীরা

বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার ছুটির দিন থেকেই থমথমে অবস্থা দেখা যায় গোটা রাজধানী জুড়ে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, গণসমাবেশের কারণে পুলিশ তল্লাশি করছে। এর জন্য ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই ক্রেতা কম। এতে ব্যবসায় মন্দা তাদের। তারা আরও বলেন, সাধারণত ছুটির দিন শুক্রবার অনেকে বাইরে খেতে বের হন। অথচ ছুটির দিনেও রাজধানীর রেস্তোরাঁগুলো ছিল অনেকটা ফাঁকা। কোনো ক্রেতা আর গ্রাহক আসেননি।

তাছাড়া আতঙ্কে বাজারেও আসেননি ক্রেতারা। সেজন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও বেচাবিক্রি একেবারেই কম। অথচ সারা সপ্তাহের ব্যবসার প্রায় ৬০ শতাংশ হয় বিশেষ করে ছুটির দিন শুক্রবার আর পরদিন শনিবার। তবে শুধু সমাবেশ ঘিরে আতঙ্কা অবস্থা তৈরি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিক্রি অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। পরদিন শুক্রবার একেবারে ভয়াবহ অবস্থা দাঁড়ায়। বাজার কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো একদম ফাঁকা হয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক দলের প্রধানদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমাদের দুই দলের প্রতি আহবান তারা যেন বসে সমস্যার সমাধান করে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করতে চাই। বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআরওএ) মহাসচিব ইমরান হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, সারা ঢাকা শহর ফাঁকা। মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে কী হয় না হয়। কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। আমরা অনেকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের ভয়াবহ অবস্থা। একে তো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তার ওপর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। আমরা বেকায়দায় আছি।

আরও পড়ুনঃ  করোনার টিকা নিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

রেস্টুরেন্ট মালিকরা বলছেন, ব্যবসা চলুক আর না চলুক তাদের শ্রমিকদের বেতন দিতেই হয়। সারা সপ্তাহ জুড়ে যে ব্যবসা হয় তার ৬০ ভাগই হয়ে থাকে শুক্র ও শনিবার। অথচ গত বৃহস্পতিবার থেকেই ব্যবসায় মন্দা দেখা গেছে। মন্দার এই ধকল আরও কয়েকদিন থাকতে পারে।

নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, মতিঝিল এলাকায় ফুটপাতেই জমে ওঠে কেনাকাটা কিন্তু শুক্রবার দেখা যায় এগুলো সব বন্ধ। জমেনি নিউমার্কেট ও মিরপুর-১ এর দোকানগুলোর বিক্রিবাট্টা। মগবাজার এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ছুটির দিন হওয়ায় আমার স্ত্রী চেয়েছিল আজকে মার্কেটে যাবে, শীতের পোশাক ও জুতো কিনবে। কিন্তু বের হইনি।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, করোনার ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারিনি আমরা। এখন শীতের সময়, পোশাক ভালো বিক্রি হওয়ার সময়। আমরা চাই ব্যবসায়িক পরিবেশ যেন বজায় থাকে। এদিকে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি ও খুচরা বাজার কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের বিক্রি অর্ধেক কমে গেছে গত সপ্তাহের তুলনায়। মাসের প্রথম শুক্রবার একটু বেশি ভিড় হওয়ার কথা। কিন্তু কারওয়ান বাজারে দেখা গেল এক ভিন্ন চিত্র। ক্রেতাদের ভিড় একেবারেই নেই।

কারওয়ান বাজারের তরকারি বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতা কম হবে বুঝতে পেরে পাইকারি বাজার থেকে কম তরকারি কিনেছি। ক্রেতা তো গত সপ্তাহের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। অর্ধেক সবজিও বিক্রি হয় নি।

মুরগি, হাঁস ও কবুতরের বাচ্চা বিক্রেতারা বললেন, বিক্রি তিনভাগের দুইভাগ কমে গেছে। কারওয়ান বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বললেন, ক্রেতাই তো নেই। অলস বসে রয়েছি। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কে চাইবে এ গন্ডগোলের সময় বাজারে আসতে! আমাদের ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ধাক্কা সামলে উঠছে পোশাক খাত

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন