শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মূল্যস্ফীতি কমে বেড়েছে মজুরি

মূল্যস্ফীতি কমে বেড়েছে মজুরি
  • প্রান্তিক মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা
  • আমন ঘরে এলে আরও কমবে মূল্যস্ফীতি: পরিকল্পনামন্ত্রী

দেশে সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি কমেছে। বেড়েছে ব্যক্তি আয়। আর আমন ধান ঘরে উঠলে মূল্যস্ফীতি আরো অনেক কমে যাবে বলে প্রত্যাশা করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের মাসিক মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশকালে এসব কথা বলেন। একনেক সভাশেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। সে হিসেবে শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ কমেছে। আর খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা সেপ্টেম্বরে মাসে ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভুত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।

এম এ মান্নান বলেন, দেশে মজুরি বেড়েছে, মূল্যস্ফীতি কমেছে। এটা খুবই ভালো দিক। নিম্ন আয়ের লোকেরা এ কারণে স্বস্তিতে ছিল। অক্টোবরের মূল্যস্ফীতির হার নিয়ে আমরা যে ধারণা করেছিলাম তা বাস্তব হয়েছে। গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯২ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

আরও পড়ুনঃ  পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলা হবে না

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যমতে, গত অক্টোবরে মজুরি হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯১ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে তা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। কৃষিতে মজুরি হার বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। যা এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯৩ শতাংশ।

এদিকে শিল্পে মজুরি হার বেড়েছে ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ। সেবাখাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৭ দশমিক শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। যা একমাসের ব্যবধানে বাড়ছে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি কমেছে কিভাবে এই প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কমার প্রবণতার বিষয়ে বলেছি। আমরা সম-সাময়িকভাবে কাজ করা হয়। এখন আমাদের পালে হাওয়া আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের তথ্য মতেও প্রবৃদ্ধি ৭/৬ মধ্যে আছে। মূল্যস্ফীতিতে কমের দিকে আছি।

এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, এলসি খুলছে না। এটি সঠিক নয়। এলসিতে সতর্কতা করা হচ্ছে। আমদানি ব্যয় কমাতে এই কাজ হচ্ছে। জুলাই মাসে এলসি খুলা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন। এলসি ২ বিলিয়ন কম খোলা হয়েছে। আর জুলাই-অক্টোবরে রেমিটেন্স এসেছে ৭ দশমিক ৯১ বিলিয়ন।
তিনি বলেন, জুলাই-অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ১৬ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন, যা গতবছর একই সময়ে ছিল ১৫ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন। ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট- এফডিআই জুলাই-সেপ্টেম্বরে এসেছে ৪৫৫ মিলিয়ন, যা গত বছর এই সময়ে ছিল ৩৭৫ মিলিয়ন।

আরও পড়ুনঃ  করোনা: দেশের সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের কিছু ধারণা ফলে যায়, তখন খুব ভালো লাগে। আমরা ইতিপূর্বে বলেছিলাম আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি কমবে। সত্যিই সেটি ফলে গেছে। এখন আমন প্রায় পেকে এসেছে। কৃষিকের ঘরে আমন উঠলে মূল্যস্ফীতিতে ভাটা লাগবে বলে আশা করি।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন