- সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতার প্রয়োগ
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে। তারা অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ। এই অভিজ্ঞতা তারা যেন সম্প্রসারণ করে। বাংলাদেশের মৎস্যখাতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাতে চাই। পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময়সহ একসাথে উন্নয়নে কাজ করতে পারি। গতকাল শনিবার রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের চিংড়িখাতের রূপান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সহায়তায় উইনরক ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নকৃত সেইফ অ্যাকুয়া ফার্মিং ফর ইকনোমিক অ্যান্ড ট্রেড ইমপ্রুভমেন্ট (সেফটি) প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
মন্ত্রী আরও জানান, যে সমুদ্র এলাকায় আমরা সার্বভৌমত্ব পেয়েছি সেখানে বিপুলসংখ্যক মাছ রয়েছে। রয়েছে অপ্রচলিত মৎস্য সম্পদ। সে ক্ষেত্রে আমাদের কর্মযজ্ঞ সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একশ বছর মেয়াদী ডেল্টা প্ল্যান করেছে। সে ডেল্টা প্ল্যানের বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে মৎস্য খাত, সমুদ্র ও জলাশয়। সে জায়গায়ও আমাদের কাজ করতে হবে।
শ ম রেজাউল করিম জানান, সেফটি প্রকল্পের কার্যক্রম বাংলাদেশের চিংড়িখাতে ব্যাপক সহযোগিতা দিয়েছে। প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কাজে লাগিয়ে মাঠ পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হচ্ছে। সেফটি প্রকল্পের সহযোগিতার উপর ভর করে আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
মৎস সম্পদ মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। কাউকে পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা একের পর এক সম্প্রসারণ হবে বলে প্রত্যাশা থাকবে। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অবশ্যই প্রশংসনীয়। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহযোগিতা সম্প্রসারণ আরও প্রয়োজন।
মন্ত্রীর দেয়া তথ্যমতে, বিশ্বের ৫০টির অধিক দেশে বাংলাদেশের মাছ এখন রপ্তানি হচ্ছে। এসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত মাছের স্বাদ ও গুণগতমান ভীষণ প্রশংসা অর্জন করছে। মৎস্য খাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও গবেষক, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন সংগঠন একসাথে কাজ করায় এ কৃতিত্ব অর্জন সম্ভব হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের আন্তরিক ও সচেষ্ট হতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এবং যুক্তরাষ্ট্র কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)-এর আন্তর্জাতিক কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ ভিক্টোরিয়া বেকার। স্বাগত বক্তব্য দেন উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মেসবাহুল আলম। সেফটি প্রকল্প নিয়ে উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান এস এম শাহীন আনোয়ার।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ইউএসডিএ এর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে নিযুক্ত কর্মকর্তাগণ, সেফটি প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষক, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং চিংড়ি খাতের অংশীজনরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
