দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম বন্দরের চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে গেল অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের গতি বেড়েছে। গত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে যেখানে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সেখানে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩২ শতাংশের বেশি।
সূত্রমতে, বিগত ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪২ হাজার ৭৩০ দশমিক ৮২ কোটি টাকা। যেখানে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ২১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে অর্থবছরের শেষের মাসগুলোতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েছে। অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল।
মূলত, বিগত অর্থবছরে আমদানি বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী ধীরে ধীরে সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক হওয়ায় আগের অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছিল। রাজস্ব বাড়ার সেই ধারা চলতি অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে।
সূত্রমতে, দেশের বৃহৎ শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টমসে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই–আগস্ট) রাজস্ব আদায় হয়েছে ১০ হাজার ৩৩৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বেশি। দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯১ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রমতে, অর্থবছরের প্রথম মাস অর্থাৎ জুলাইয়ে ৪ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরিত হয়েছে ৪ হাজার ৭৮১ কোটি ২১ লাখ টাকা। অর্থাৎ জুলাই মাসের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। এছাড়া আগস্টে ৫ হাজার ৬৬১ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৫৫৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
সূত্রমতে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে চলতি অর্থবছরে ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে ৬ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। অক্টোবর মাসে ৬ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। নভেম্বর মাসে ৬ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। ডিসেম্বর মাসে ৬ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে ৬ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসে ৫ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। মার্চ মাসে ৬ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এপ্রিল মাসে ৬ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। মে মাসে ৪ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা এবং জুন মাসে ৬ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে ইতিবাচক ধারায় শুরু হয়েছে রাজস্ব আদায়। এটি আমাদের জন্য অবশ্যই ভালো দিক। চট্টগ্রাম কাস্টমস অভ্যন্তরীণ রাজস্বের অন্যতম বৃহৎ যোগানদাতা প্রতিষ্ঠান। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯১ কোটি টাকা বেশি আদায় করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া গত অর্থবছরের হিসেবে আড়াই হাজার কোটি টাকারও বেশি।
মো. ফাইজুর রহমান বলেন, রাজস্ব সুরক্ষায় চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এছাড়া সঠিক সিপিসির ব্যবহার, যথাযথ এইচএস কোড এবং ভ্যালুতে পণ্যের শুল্কায়নের ফলে রাজস্ব আহরণে গতি বেড়েছে।