ডলারের উচ্চমূল্যে বিপাকে পড়েছে আমদানি কারকরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া রেট ৮৪ টাকা ৮৫ পয়সা হলেও ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত প্রতি ডলার লেনদেন করে থাকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ফলে আমদানি ব্যয় ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। আর এই ব্যয় বাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকারকরা। আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে দেয়া এক চিঠিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে ।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ডলারের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। প্রথমে ৫ পয়সা পরে ১০, ১৫ ও ২০ পয়সা করে কয়েক দফা বেড়ে বর্তমানে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৯০ পয়সায় কেনাবেচা হচ্ছে। অথচ এক বছর আগে ডলারের দাম ছিল ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা।
হিসাব অনুযায়ী এক বছরেই আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম বেড়েছে এক টাকা। অন্যদিকে মদানি দায় মেটাতে ব্যবসায়ীদের এই দামেই ডলার কিনতে হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন অনেক ব্যাংক। কোনো কোনো ব্যাংক ডলারের দাম রাখছে ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত।
তবে ডলারে এমন দাম বৃদ্ধি এবারই প্রথম না। এর আগে ২০১৭ সালের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছিল ১ টাকা ২০ পয়সা। আর তার আগের বছরের একই সময়ে ডলারের দর বেড়েছিল ৩ টাকা ৯০ পয়সা। তবে ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত বেশ কয়েক বছর ডলারের দাম স্থিতিশীল ছিল।
চিঠিতে আর উল্লেখ্য করা হয়, শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ইউপাস এলসির মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ দিন করেতে । ইস্পাত শিল্পের কয়েকটি পণ্যে বর্তমানে তা প্রযোজ্য। এতে করে ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সংকট অনেকাংশে কমে যাবে।
মুদ্রাবাজারে ডলারের বহিঃপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার (ডলার) সংকট তৈরি হয়েছে। সার্বিক অর্থনীতির স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত রেটে ডলার বিনিময়ের জন্য কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা প্রদান এবং শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানিতে ইউপাস এলসির মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ দিন করলে বৈদেশিক মুদ্রার বহিঃপ্রবাহ হ্রাস পাবে এবং আর্থিক খাতে তারল্য বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন আমদানি কারকরা ।
আনন্দবাজার/শহক